বোয়ালমারী  প্রতিনিধি ঃ ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার ময়না ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী পলাশ বিশ্বাসকে সমর্থন দিয়ে আওয়ামী লীগের দুই বিদ্রোহী প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে দাড়িয়েছেন। একই উপজেলার ঘোষপুর ইউনিয়ন থেকে নৌকা মার্কার প্রার্থী এস এম ফারুক হোসেনকে সমর্থন দিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীতা প্রত্যহার করেছেন আরেক বিদ্রোহী প্রার্থী।

গতকাল সোমবার রাতে উপজেলার ময়না ইউনিয়নের বর্নিচর গ্রামে অনুষ্ঠিত এক ঘরোয়া বৈঠকে উপজেলা আ.লীগের নেতৃবৃন্দ ও পলাশ বিশ্বাসের উপস্থিতিতে আ.লীগের বিদ্রোহী মো. সাইফুজ্জামান জিন্নাহ প্রার্থীতা থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। এর আগে গত রবিবার রাতে ময়না ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের আরেক বিদ্রোহী প্রার্থী কামরুজ্জামান নৌকার প্রার্থীর উপস্থিতিতে বর্নিচর বাজারে মিছিল দেন। এছাড়া সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলার ঘোষপুর ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী (চশমা) ইউনিয়ন আওয়ামী কৃষকলীগের সভাপতি চাঁন মিয়া নিজবাড়িতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের উপস্থিতিতে প্রার্থীতা প্রত্যহার করেন।

জানা যায়, ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলায় চতুর্থ ধাপে ১০টি ইউনিয়নের নির্বাচন আগামী ২৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে ময়না ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পান জেলা মৎস্যজীবী লীগের সদস্য ও ওই ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য পলাশ বিশ্বাস। দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত অপর তিন বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা আ.লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাসির মো. সেলিম (চশমা), উপজেলা আ.লীগের সদস্য কামরুজ্জামান (অটোরিকশা) ও ইউনিয়ন আ.লীগের সদস্য মো. সাইফুজ্জামান জিন্নাহ (মোটরসাইকেল) প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য মাঠে ছিলেন।

এ ইউনিয়নে আরো আটজন চেয়ারম্যান প্রার্থী নির্বাচনে লড়ছেন। সোমবার রাতে উপজেলার ময়না ইউনিয়নের বর্নিচর গ্রামে এক ঘরোয়া বৈঠকে বিদ্রোহী প্রার্থী সাইফুজ্জামান জিন্নাহ নৌকা প্রতীকের পলাশ বিশ্বাসকে সমর্থন দিয়ে নিজে নির্বাচন থেকে সরে দাড়ান। এ সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, উপজেলা চেয়ারম্যান এমএম মোশাররফ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মীরদাহ পিকুল, সদস্য আনিচুজ্জামান, মাহফুজুর রহমান পাখি, আ. মান্নান মোল্যা, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড আ.লীগের সভাপতি লুলু, সাধারণ সম্পাদক আ. সামাদসহ গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগেরদিন রবিবার আওয়ামী লীগের অপর বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য কামরুজ্জামান নৌকা মার্কাকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। এক প্রতিক্রিয়ায় মো. সাইফুজ্জামান জিন্নাহ বলেন, আট বছর বয়সে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বাবার সাথে ভারতে গিয়েছিলাম। আর ভোটার হওয়ার পর থেকে কোনদিন আওয়ামী লীগের বাইরে ভোট দেইনি। সবকিছুর পরও আমার সমর্থকদের নিয়ে দলীয় প্রার্থী পলাশকে সমর্থন দিয়ে ঘরে (আওয়ামী লীগ) ফিরে এসেছি।

প্রসঙ্গত, দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের পদে থেকে প্রার্থী হওয়ায় উপজেলা আ.লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বর্তমান চেয়ারম্যান নাসির মো. সেলিম, উপজেলা আ.লীগের সদস্য কামরুজ্জামান এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য সাইফুজ্জামান জিন্নাহকে গত ১ ডিসেম্বর প্রার্থীতা প্রত্যহারের জন্য চিঠি দেওয়া হয়। চিঠিতে ৬ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করার জন্য বলা হয়। কিন্তু প্রত্যহার না করায় কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের কঠোর নির্দেশনায় উপজেলা আ.লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাসির মো. সেলিম, সদস্য কামরুজ্জামান ও ইউনিয়ন আ.লীগের সদস্য মো. সাইফুজ্জামান জিন্নাহ’র বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে উপজেলা আওয়ামী লীগ।