বোয়ালমারী প্রতিনিধি: ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে উপজেলার অবৈধভাবে মাটি ও বালু উত্তোলনকারী ও চিহ্নিত মাদক কারবারীরা। সম্প্রতি কৃষি জমি ও নদীপারের মাটি কেটে অবৈধভাবে বিক্রয় এবং পুকুর খনন করায় বেশ কয়েকটি স্থানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী হাকিম ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। বারবার সতর্ক করার পরেও একাজ থেকে নিবৃত না হলে মোটা অঙ্কের জরিমানা ও অবৈধ কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জাম ধ্বংস করার প্রতিবাদে উপজেলার এক শ্রেণির মাদক ব্যবসায়ী ও মাটিখেকোরা এই বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভকারীরা উপজেলার প্রধান ফটকে দাঁড়িয়ে ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষোভ করেন।

বোয়ালমারী পৌরসভার স্থানীয় কিছু রাজনৈতিক নেতা এবং শেখর ইউনিয়ন আ’লীগের এক প্রভাবশালী নেতা এই বিক্ষোভের ইন্ধনদাতা বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া বিক্ষোভ চলাকালীন সময়ে উপজেলার এক শিক্ষা কর্মকর্তাসহ উপজেলা পরিষদের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীরও বিক্ষোভে ইন্ধনের তৎপরতা ছিল লক্ষ্যনীয়।

জানা যায়, উপজেলার বিভিন্ন স্থানে কৃষি জমি কেটে পুকুর খনন করার অপরাধে সম্প্রতি ইউএনও মো. রেজাউল করিম বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। আদালতে বালুবহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন-২০১০ এর বিভিন্ন ধারায় বিভিন্ন জনকে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেয়া হয়। সেই সাথে অবৈধ কাজে ব্যবহৃত জব্দকৃত ট্রলি এবং ভেকু বিনষ্ট করা হয়। এসব ঘটনায় সংক্ষুব্ধ ব্যক্তিরা একটি পক্ষের ইন্ধনে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ৬ ফেব্রুয়ারি রবিবার বেলা এগারোটার দিকে প্রথমে উপজেলা পরিষদের সামনে মানববন্ধন করে। পরে বিক্ষুব্ধরা উপজেলা পরিষদের প্রধান ফটক ও হাসপাতাল রোড আটকে ইউএনও-র বিরুদ্ধে বিভিন্ন আপত্তিকর শ্লোগান দেয়। বিক্ষোভকারীদের অধিকাংশই কৃষি জমি, নদীপাড়ের সরকারি মাটি ও পুকুর খননকাজে অংশ নেয়া ভেকুর চালক, মাটি টানার কাজে ব্যবহৃত অবৈধ ট্রলির (খেক্কোর) চালক, হেলপার, ড্রেজার মালিক, ইটের ভাটায় মাটি বিক্রয়কারী এবং মাদক মামলায় বিভিন্ন সময়ে আটক হওয়া মাদক কারবারিরা।

এ বিক্ষোভে বোয়ালমারী পৌরসভার স্থানীয় কিছু রাজনৈতিক নেতা এবং শেখর ইউনিয়ন আ’লীগের এক প্রভাবশালী নেতা ইন্ধনদাতা বলে গুঞ্জন রয়েছে। বিক্ষোভ চলাকালীন সময়ে উপজেলার এক শিক্ষা কর্মকর্তার উস্কানি ও তৎপরতাও লক্ষ্য করা যায়। বিক্ষোভ কারীরা সড়ক অবরোধ করে রাখায় শহরের ব্যস্ততম সড়কের দুই পাশে জাম সৃষ্টি হয়। এসময় উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সৈয়দ মোর্তজা আলী তমাল ও সাধারণ সম্পাদক প্রান্ত সিদ্দিকী বিক্ষোভকারীদের বুঝিয়ে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। পরে বেলা একটার দিকে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।