1. khan261278@gmail.com : Oitijjho Bangla : Oitijjho Bangla
  2. oitijjhobangla24@gmail.com : Editor Panel : Editor Panel
  3. jmitsolution24@gmail.com : support :
শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫, ০২:৪২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
বোয়ালমারীতে উৎসবমুখর পরিবেশে রথযাত্রা উৎসব অনুষ্ঠিত এক মৎস্যজীবীর বৈঠার আঘাতে মধুমতি নদীতে নিখোঁজ অপর মৎস্যজীবী বোয়ালমারীতে যৌথ বাহিনীর অভিযানে গাঁজা-ইয়াবাসহ আটক ৩ বোয়ালমারীতে সাবেক মেম্বারের বাড়িতে ডাকাতি, স্বর্ণালঙ্কার-টাকা লুট বোয়ালমারীতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গিয়ে মারামারি, আহত ৬ বোয়ালমারীতে পাটজাত পণ্য তৈরি ও হাতপাখা বাজারজাত করণ প্রশিক্ষণের উদ্বোধন বোয়ালমারীতে শেখ রাসেল শিশু পার্ক উদ্বোধন বোয়ালমারীতে বর্ণাঢ্য আয়োজনে যুবলীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিক উদযাপন দুর্গাপূজা উপলক্ষে বোয়ালমারী পুলিশের মতবিনিময় সভা ভাতা নয় পিতার মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি চান এক গণমাধ্যমকর্মী

অংশুর কাছে খোলা চিঠি(৪)-নাসরিন আক্তার

  • প্রকাশিত : সোমবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২০
  • ৭৩৪ জন পঠিত

অংশু

নির্দয় পুরুষ! কেমন আছো তুমি জানি না।বার বার ভাবি,মনে মনে প্রতিজ্ঞা করি কোন একটি ছোট্ট মুহূর্তও আমি তোমায় ভেবে নষ্ট করবো না।কিন্তু হায়,পারি না!কিছুতেই পারি না!বার বার নিজের কাছে হেরে যাই।বার বার চোখের জলে বুক ভাসাই।জানি তুমি দেখো না,তুমি ভাবো না,কোন মূল্য নেই তোমার কাছে -আমার এই আর্তির।এ শুধু আমার একার কষ্ট,এ শুধু আমার একারই যন্ত্রনা,এ শুধু আমার একারই ভালোবাসা।

আচ্ছা অংশু তোমার কি একবারও ইচ্ছে করে না আমার খবর নিতে!আমি এত সামান্য একজন হয়েও কতবার কতভাবে চেষ্টা করেছি তোমার খবর নিতে।তোমার বন্ধুদের হাতে-পায়ে ধরেছিলাম কোন ভাবে যদি তোমার একটা ঠিকানা পাওয়া যায়।সবার একই কথা- তুমি কারো সাথেই কোন যোগাযোগ রাখোনি।

কি করে পারলে তুমি সব ভুলে যেতে কিংবা সব ভুলে থাকতে!সেই টি.এস.সির চত্বর,কন্ঠ শীলনে আবৃত্তির ক্লাস,রমনা পার্কের বেঞ্চ,নরেন স্যারের সাথে “মেঘনাদ বধ” নিয়ে আলোচনা! ভুলে কিগো গেছো!নাকি আমার মতো তুমিও প্রতিনিয়ত পুড়ে মরো?না,তুমি মনেই করো না এসব!যদি করতে তবে পারতে না থাকতে।তোমার ব্যাকুলতা তোমাকে আমার কাছে নিয়ে আসতো,একটি বারের জন্যে হলেও!!!

তুমি সবসময় বলতে

সোনারে এত আবেগ ভালো নয়।এই আবেগ তোমার অনেক ক্ষতি করে দেবে।

অংশু,এই অংশু দেখে যাও। একটিবারের জন্যে হলেও আমায় দেখে যাও।আমার আবেগ আমাকে আজ কোথায় এনে দাঁড় করিয়েছে!!!!

বড্ড বাস্তববাদী মানুষ তুমি।তাই নির্দিধায় পারো সবকিছু উপেক্ষা করতে।এমন কি আমাকেও!!

আজ দুটি চোখ কিছুতেই বাধ মানছে না।জোয়ার জলে ভেসে যাচ্ছে বুক।এত বছরে এত কষ্ট আমি কখনো পাই নি অংশু।

যে ছোট্ট গ্রামটিতে আমি থাকি,সকলেই ভালোবাসে আমাকে,শ্রদ্ধা করে,সম্মান করে,এক কথায় মাথায় তুলে রাখে।ওদের ভালোবাসায় ডুবে থাকি আমি।নিজেকে প্রতিটি মুহূর্ত ব্যস্ত রাখি ওদের প্রয়োজনে।এই গ্রামের প্রতিটি ছেলেমেয়ে আমার সন্তানের মতো।প্রয়োজনে আমি ওদের শাসন করি সোহাগ করি।মা- বাবারাও মেনে নেন।কোন ছেলে-মেয়ে অবাধ্যতা করলে আমার কাছে নিয়ে আসে শাসনের জন্য।

কিন্তু গতকাল সবকিছু কেমন করে যেন বদলে গেল।এক ছাত্র চরম অবাধ্যতা করেছিল।স্বভাব সুলভ শাসন করি বাচ্চাটাকে।শাসনটা হয়তো একটু বেশিই হয়ে গিয়েছিল।বাচ্চাটির মা এসে আমার হাত ধরে কেঁদে ফেললেন

আপা এভাবে মারলেন কেন?আমাকে একবার বলে দেখতে পারতেন!

ছেলেটির মায়ের সাথে মাঝ বয়েসী এক মহিলা এসছিলেন।পরে জানতে পারি সেই মহিলা ওদের দূর সম্পর্কের আত্মীয়া,ঢাকা থেকে এসছেন।

তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তিনি আমার দিকে তাকালেন,ঝাঝালো সুরে বললেন

শুনেছি আপনি ভালো মানুষ,এই ভালোর নমুনা!!!! একা থাকেন তাই না? নিজের যদি সন্তান থাকতো তবে অবশ্যই অন্যের বাচ্চাকে এভাবে আঘাত করতে পারতেন না!!!

কথাটি শোনার সাথে সাথে বিশ্বাস করো অংশু সারা পৃথিবী অন্ধকার হয়ে গেল আমার কাছে।বার বার মনে হতে লাগলো— এই কথাটি শোনার জন্য তুমি দায়ী।শুধু তুমি!!!!

কত স্বপ্ন দেখাতে তুমি আমায়।কত গল্প হতো সংসার নিয়ে। কত গল্প করতে তুমি আমাদের ছোট্ট ছোট্ট অংশু আর সোনামণি নিয়ে।

অংশু মনে পড়ে বার বার ছেলে-মেয়ে নিয়ে আমার আর তোমার ঝগড়া হতো।আমি বলতাম

আমার ছোট্ট একটা অংশু হলেই হবে।আমি ওকে আদর করবো, সোহাগ করবো।

কিছুতেই মানতে না তুমি সবসময় প্রতিবাদ করতে, বলতে

হবে না।আমার দুটো ছোট্ট অংশু চাই।

ঠিক আছে,তাই হবে।

হাসতে হাসতে বলতাম আমি।তুমি আবারও প্রতিবাদ করে বলতে

না।আমার তাতেও হবে না।

আমি রেগে গিয়ে বলতাম

কি ব্যাপার বলোতো,তোমার এক ডজন ছেলেমেয়ে চাই বুঝি?তুমি হাসতে হাসতে আমার গলা জড়িয়ে ধরে বলতে

ইস্ তুমি ছোট্ট ছোট্ট অংশুদের আদর করবে আর আমার বুঝি ইচ্ছে করে না।আমিও ছোট্ট ছোট্ট তোমার মতো মিষ্টি মিষ্টি সোমামণিদের অনেক আদর করবো।

তাহলে????

আমাদের ঘর আলো করে থাকবে ছোট্ট ছোট্ট দুটো অংশু আর ছোট্ট দুটো সোনামণি।তুমি আর আমি খাটের উপর বসে বসে কবিতা পড়বো আর ওরা আমার ঘর আলো করে ঘুরে বেড়াবে।

অংশু, এই অংশু একবার বলো না আমায় -এমন একটি সংসার কি আমাদের হতে পারতো না!!! কি অন্যায় করেছিলাম আমি।কেন আমার এই ছোট্ট ছোট্ট চাওয়াগুলো মুখ থুবড়ে পড়ে থাকে!! জীবন এতটা কঠিন কেন?কেন নিয়তির কাছে এতটা অসহায় আমরা!!!!!!

বিশ্বাস করো অংশু কাল সারারাত আমি ঘুমোতে পারি নি।তারাভরা রাতের আকাশের দিকে তাকিয়ে আমি শুধু তোমার সাথে কথা বলেছি।কত যে অভিযোগ করেছি বোঝাতে পারবো না তোমায়।বুকটা ফুলে ফুলে উঠেছে।নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছিল।ভোরের দিকে যখন একটু চোখ লেগে এলো।জীবন্ত তুমি এলে আমার স্বপ্নে।আমার বিছানায় আমার মাথার কাছে বসে শান্ত সুরে ডাকলে

সোনা,ও সোনা চেয়ে দেখো আমি এসছি।

আমি চোখ মেলে তাকালাম।তুমি বসে আছো আমার বিছানায়।অপলক তাকিয়ে রইলাম তোমার দিকে।তোমার নিশ্বাস আমার চোখে মুখে পড়ছে।আমি তোমার কোলের উপর মাথাটা রাখলাম।বুক ভরা এত অভিযোগ অথচ একটিও কথা বলতে পারলাম না তোমাকে।তোমার কোলে মুখ গুঁজে হু হু করে কেঁদে উঠলাম।নীরব তুমি,শুধু আমার মাথায় চুলে হাত বুলিয়ে দিলে।

ভোরের আলো চোখে পড়তেই ঘুম ভেঙে গেল।চোখ মেলে দেখি শূণ্য ঘরে শূণ্য বিছানায় একা,একদম একা আমি!!!!

চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করছে…..

অংশু,এই অংশু শুনতে পাচ্ছো?শুনতে পারছো তুমি????তোমার সোনা ডাকছে তোমায়, একবার এসো।একবার এসো আমার সব শূণ্যতাকে পূর্ণ করে দিতে।আর পারছি না আমি!!! এ ভার বইতে পারছি না।এতটা নির্দয় হয়ো না!!!!!!!

ইতি

তোমার সোনা।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2025
Development by : JM IT SOLUTION
error: Content is protected !!