বোয়ালমারী প্রতিনিধি: ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে এক আওয়ামী জনপ্রতিনিধির দৌরাত্মে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। ৫ আগস্ট আওয়ামী পট পরিবর্তনের পর খোলস পাল্টিয়ে এখন বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে এলাকায় নানা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন। সরকারি জমি দখল, ভাতা কার্ড বাণিজ্য, সালিশ দরবারে উৎকোচ গ্রহণসহ নানা অভিযোগ পাওয়া গেছে তার বিরুদ্ধে। আওয়ামী দোসর এই জনপ্রতিনিধি হলেন রুপাপাত ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সানোয়ার মোল্যা।
সরেজমিনে অনুসন্ধানে তার বিরুদ্ধে বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। সম্প্রতি রুপাপাত বাজারের তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনের সরকারি জমি দখল টোং ঘর তুলে রনি মোল্যা নামের এক পল্ট্রি ব্যবসায়ীর নিকট থেকে এককালীন জমানত হিসেবে ৩০ হাজার টাকা নিয়ে মাসিক ২ হাজার টাকায় ভাড়া দেয়। এতে স্থানটিতে দীর্ঘদিন যাবত যারা মাছের ব্যবসা করে আসছিল তারা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এ ঘটনায় রুপাপাত বাজারে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলে স্থানীয়রা জায়গাটি দখলমুক্ত করেন। নিজেকে বিএনপি নেতা দাবি করে জায়গাটি ফের দখলের পায়তারা করছেন তিনি। ধুরন্ধর এই জনপ্রতিনিধি নিজেকে বিএনপি নেতা দাবি করলেও বিগত সরকারের আমলে আওয়ামীলীগের পদ-পদবী বাগিয়ে নিয়ে কেন্দ্রীয় বিভিন্ন নেতার ছত্রছায়ায় এলাকায় অপকর্মের বিস্তার ঘটিয়েছেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে তার ছিল নিবিড় সখ্যতা। তাদের সাথে বিভিন্ন সময় ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে নিজের ক্ষমতা জাহির করতেন। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরিবর্তিত সময়ে অতীত পরিচয় মুছে বিএনপি নেতা বনে গেছে তিনি।
ইতোপূর্বে মাতৃত্বকালীন ভাতা করে দেয়ার কথা বলে হতদরিদ্র কয়েকটি পরিবারের নিকট থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে উঠে সানোয়ার মোল্যার বিরুদ্ধে। কদমী গ্রামের মো. লুৎফর রহমানের স্ত্রী নিরু বেগমের নিকট থেকে পুত্রবধূ ও কন্যার ভাতা করে দেয়ার কথা বলে ১০ হাজার টাকা নেন তিনি। এ ব্যাপারে বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন নিরু বেগম। তখন বিভিন্ন মিডিয়ায় এ সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশিত হয়।এছাড়া ইউপি সদস্য সানোয়ার মোল্যার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সালিশ বাণিজ্যে উৎকোচ গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে।
মুকসুদপুর উপজেলার পাশারগাতী ইউনিয়নের পাচুড়িয়া গ্রামের লাভলু মোল্যার ছেলে পোলট্রি মুরগির ব্যবসায়ী মো. রনি মোল্যা (২৬) বলেন- মো. সানোয়ার মেম্বারের নিকট থেকে আমি ব্যবসার জন্য একটি ঘর ভাড়া নেই। রুপাপাত বাজারে তার ঘরের একটি অংশ আমাকে দিতে চায়, পরে মেম্বার জানান আপতত তোমাকে আমার ঘরের সামনে একটা ছাপড়া তুলে দিচ্ছি কিছুদিন পর ঘর মেরামত করে দেব। পরে ছাপড়া তুলে দিলে আমি ব্যবসা শুরু করি। দুদিন আগে স্থানীয়রা ঘরটি ভেঙে ফেলে। আমি এখন বড়ই বিপদে আছি। মেম্বার বলেছে কয়েকদিনের মধ্যে ঝামেলা মিটিয়ে ঘর তুলে দিবে।
রুপাপাত ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সানোয়ার মোল্যা বলেন- আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে লিজ নেওয়া জায়গায় ঘর তুলেছিলাম। মহসিন সিকদার লোকজন দিয়ে আমার ঘর ভেঙে দিয়েছে। লিজ নেওয়া সরকারি জায়গায় ঘর তুলেছি সরকারের প্রয়োজনে তহশিলদার বা এসিল্যান্ড ভাঙতে পারে, তারা ভাঙার কে? আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন এখন আবার বিএনপি করেন বলে পরিচয় দিচ্ছেন কোনটা সত্য? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন- ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে আমাকে পদ-পদবী দিয়েছিল কতিপয় ব্যক্তিরা। আমি মূলত বিএনপি করি। আপনারা এলাকায় এসে জানুন, আমার শত্রুও বলবে আমি বিএনপির লোক।
Leave a Reply