1. khan261278@gmail.com : Oitijjho Bangla : Oitijjho Bangla
  2. oitijjhobangla24@gmail.com : Editor Panel : Editor Panel
  3. jmitsolution24@gmail.com : support :
শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫, ০৫:৩৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
বোয়ালমারীতে উৎসবমুখর পরিবেশে রথযাত্রা উৎসব অনুষ্ঠিত এক মৎস্যজীবীর বৈঠার আঘাতে মধুমতি নদীতে নিখোঁজ অপর মৎস্যজীবী বোয়ালমারীতে যৌথ বাহিনীর অভিযানে গাঁজা-ইয়াবাসহ আটক ৩ বোয়ালমারীতে সাবেক মেম্বারের বাড়িতে ডাকাতি, স্বর্ণালঙ্কার-টাকা লুট বোয়ালমারীতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গিয়ে মারামারি, আহত ৬ বোয়ালমারীতে পাটজাত পণ্য তৈরি ও হাতপাখা বাজারজাত করণ প্রশিক্ষণের উদ্বোধন বোয়ালমারীতে শেখ রাসেল শিশু পার্ক উদ্বোধন বোয়ালমারীতে বর্ণাঢ্য আয়োজনে যুবলীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিক উদযাপন দুর্গাপূজা উপলক্ষে বোয়ালমারী পুলিশের মতবিনিময় সভা ভাতা নয় পিতার মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি চান এক গণমাধ্যমকর্মী

অযোধ্যা ভ্রমণ কথা –রুমা পন্ডিত

  • প্রকাশিত : বৃহস্পতিবার, ১৬ জুলাই, ২০২০
  • ৫৩৭ জন পঠিত

অযোধ্যা সফরের দ্বিতীয় দিন, হোটেলের ম্যানেজার দশ বারোটি গন্তব্যের লিস্ট ও রাস্তার মোটামুটি একটা ছক বলে দিলেন।তিন মা মেয়ে ও ড্রাইভার বেরিয়ে পড়লাম।দুর্গাপুর থেকে সটান গাড়িতেই গেছি, এবং আমাদের ড্রাইভার_ ভাই বিমল কখনো অযোধ্যা যায়নি,তাই রাস্তা যেখানে দুই বা তিন ভাগ হয়ে আমাদের দিকে রসিকতার নজরে তাকাচ্ছিল,আর ফোনের টাওয়ার বিভ্রাটের জন্য গুগল দিদিও হেঁচকি তুলছিলেন তখন চারজনের চোখই কোনো এক স্থানীয় পথচারীর খোঁজে ব্যস্ত হয়ে পড়ছিল।তাঁদের নির্দেশিকায় প্রথম চারটি স্পট দেখে, পৌঁছে গেলাম আপার ড্যাম।

আপার ড্যামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মোহিত হয়ে, নানান অঙ্গভঙ্গি করে(আর কোনো পর্যটক না থাকার সুযোগে) খান পঞ্চাশ ছবি তুলে, মায়ের তাড়ায় খুব কম ছবি তোলা হলো এই আফসোস করতে করতে পরের গন্তব্য “কাঠের দূর্গা মন্দির” এর দিকে রওনা হলাম।রাস্তার দুপাশে ছবির মতো সাজানো আদিবাসী গ্রাম দেখে মুগ্ধ হতেই হবে।ঘরের দেওয়ালে হরেক রঙের নক্সা, নিকনো উঠোন, কোলে কাঁখে ছেলেপুলে নিয়ে মায়েদের গৃহস্থালি ব্যস্ততা, পালিত পশু পাখিদের যাপনচিত্র মন দিয়ে দেখতে দেখতেই গ্রাম পেরিয়ে জংগলে।

এদিক ওদিক ঘুরে বুঝলাম কাঠের দূর্গা মন্দির দেখতে গেলে পায়ে হেঁটেই যেতে হবে, গাড়ি যাবে না,অগত্যা একটি মাঠে গাড়িটা রেখে স্থানীয় মানুষদের দেখানো পথে পা বাড়ালাম।কিছু দূর যেতেই চোখে পড়লো দুটি ঠাকুমা রাস্তা দুধারে বসে রোদ মাখছে আর গল্পে মেতে আছে, ছ সাত বছরের নাতিটি খেলা করছে নিজের মনে।ছেলেটিকে মন্দিরের কথা জিজ্ঞেস করতেই সে দু হাতে তার ঢিলা প্যান্টটি ঠিক করে নিয়ে,অবিলম্বে তার ছোট্ট কাঁধে আমাদের চারজন প্রাপ্তবয়স্ক পর্যটকের দায়ীত্ব নিয়ে এগিয়ে চললো, আমরাও হাঁফ ছেড়ে তার পিছু নিলাম।

মন্দির দর্শন শেষ করে ওর কাছে সীতা কুণ্ডের রাস্তা জানতে চাইলে সে অত্যন্ত ব্যস্ত হয়ে বললো, “ইদিকেই বঠে, ঠায়, বেশী ধুর লয়, আসো আমার সঙে”। যাক বাবা! রাস্তা খুঁজতে হবে না, খুদে গাইড আমাদের পথ দেখাবে। তো সেই গাইডের( নাম সঞ্জীত মুড়া) পিছু পিছু চলতে শুরু করলাম।দু পাশে ধান জমি, মাঝে আলপথ।অপরূপ দৃশ্য, সোনায় মোড়া ক্ষেত দুপাশে, যতই এগোচ্ছি পথ সরু হয়ে যাচ্ছে, আর তারপরে হঠাৎ ঢালু! সেই গাইড তো প্রজাপতি হয়ে উড়ে যাচ্ছে, তার পেছনেই আমার মা আর বিমল এমন ভাবে চলছে যেন কোনো অসুবিধাই নেই, বিপদে পড়ে গেছি আমি আর আমার মেয়ে।তার ওপর মায়ের ডাক,” রুমি তাড়াতাড়ি আয়,পরে ছবি তুলবি।” কোথায় ছবি! রুমি আর রুমির মেয়ে ডোনা তখন হাত ধরাধরি করে কে, কোন পা, কোথায় আগে রাখবে তার মহড়ায় ব্যস্ত।আমার অল্প হিল আর ডোনার ঝিকিমিকি শু তখন পা থেকে হাতে উঠে এসেছে।অনেক কায়দায়, কিছুটা হড়কে, কিছুটা ছেঁচড়ে যখন ঢালু অতিক্রম করে জয়ের হাসি হেসে সামনে তাকালাম তখন পাঁচ হাতের মধ্যে আগের চেয়েও বড় গর্ত আর প্রজাপতি সহ মা বাইশ হাত এগিয়ে গেছে।

এর পরের প্রশ্ন হলো সীতাকুণ্ড দর্শনের পর এই এডভেঞ্চারাস পথেই কি ফিরতে হবে? সর্বনাশ!! গর্ত, ঢালু, ঝোপ, কাদা সহ দীর্ঘ পথ ( গাইড বলেছিল ঠায়!) পেরিয়ে যখন সীতাকুণ্ডে পৌঁছালাম, তখন আমরা মা মেয়ে যেন সার্কাসের বিধ্বস্ত খেলোয়াড়,আমার মা আর বিমল এক স্নান রত গ্রামবাসীর সাথে গল্প জুড়েছে,আর প্রজাপতি অবাক চোখে আমাদের দুই মা মেয়েকে জরিপ করছে,তার চোখের জিজ্ঞাসা হলো,”এই সামান্য পথে এমন গলদঘর্ম অবস্থা!” যাইহোক, সীতাকুণ্ডের বাহ্যিক রূপ দেখে কিন্তু বেশ হতাশ হলাম।

বাইরেটা পাথরে বাঁধানো একটা কুয়োর মতো আর ভেতরের গভীরতায়, একটা চৌবাচ্চা। কিন্তু বিশেষত্ব হলো যে কোনো ঋতুতেই কুণ্ডে একই জল থাকে, একটা পাইপ দিয়ে অনবরত জল বেরিয়ে যাচ্ছে,তাতেই আশেপাশের দু তিনটি গ্রামের প্রয়োজন মেটে।জল নাকি কমে না।এক স্থানীয় গ্রামবাসীর কাছে গল্প শুনলাম, বহু বছর আগে বুদ্ধপূর্ণিমায় শিকার পরবের পর কয়েকজন শিকারী এই কুণ্ডের কাছে বসে শিকারের মাংস আর হাড়িয়া খেয়ে হাত পা ধুতে এসেছিল এই কুণ্ডে, তারপর তাদের আর খুঁজে পাওয়া যায়নি, এই কুণ্ডেই নাকি তারা তলিয়ে গেছে।দেখতে যতই সাধারণ হোক, সীতাকুণ্ড রহস্যময়ী, অসামান্য। বেশ কিছুক্ষণ সময় কাটিয়ে কয়েকটা ছবি তুলে ফিরে এলাম “অন্য ” পথে, সেই কৃতিত্বও ওই প্রজাপতির।

পথে অনেক গল্প হলো তার সাথে।সামান্য পারিশ্রমিক দিয়ে আর মহার্ঘ্য অভিজ্ঞতা নিয়ে আলাদা হলাম আমরা।ভালো থাকিস প্রজাপতি, এই প্রকৃতির কোলেপিঠে ধীরে ধীরে বেড়ে ওঠো। পরের গন্তব্য বামনি ঝোরা, চাকা ঘুরলো।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2025
Development by : JM IT SOLUTION
error: Content is protected !!