বোয়ালমারী প্রতিনিধি: ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গিয়ে দুই পক্ষের মারামারিতে অন্তত ৬ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ৪ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। পরে ইউএনও এবং ওসির উপস্থিতিতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। উভয় পক্ষ মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
বুধবার দুপুরের দিকে উপজেলার পৌর সদরের ছোলনা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, পৌর সদরের ছোলনা গ্রামের জব্দুল মোল্যার ছেলে মো. বাবুল মোল্যার নিকট ১৩ মাসের বিদ্যুৎ বিল বাবদ ১৪ হাজার ৬১০ টাকা পাওনা হয় ফরিদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির। বুধবার দুপুরের দিকে স্থানীয় নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক বাবুল মোল্যার বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে যায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি বোয়ালমারী জোনাল অফিসের কর্মচারীরা। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে মারামারি শুরু হয়। এ সময় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির শাহেদ, জুয়েল, রাসেল, হাবিব এবং বাবুল মোল্যা ও তার ভাই শাহজাহান আহত হন। পল্লী বিদ্যুৎ এর দুইজন ও বাবুল ও শাহজাহানকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। অপর দুইজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
বাবুল মোল্যা অভিযোগ করে বলেন, আমি ঘরে ঘুমিয়ে ছিলাম। হঠাৎ শোর চিৎকার শুনে বাইরে গিয়ে পল্লী বিদ্যুৎের লোকজনকে দেখতে পাই। তারা আমার ভাইকে মারতেছে। তাকে ঠেকাতে এগিয়ে গেলে আমাকেও ঘিরে ধরে মারতে থাকে। বড় রেঞ্জ দিয়ে বাড়ি মেরে আমার মাথা ফাটিয়ে দেয়। গ্রামের লোকজন এগিয়ে এলে তারা পালিয়ে যায়। পরে এসে আমাদের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। আমরা একটু সুস্থ হলেই মামলা করবো।
এ ব্যাপারে বোয়ালমারী নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোঃ নজরুল সেখ বলেন, বোয়ালমারী নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক মোঃ বাবুল মোল্লার বাড়ির বিদ্যুৎ বিল কয়েক মাস বাকি ছিল। আজ পল্লী বিদ্যুৎের কমপক্ষে ৩০ জন লোক নিয়ে তার বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিছিন্ন করতে গেলে বাবুল মোল্লা সময় চেয়ে বাঁধা দেন। সংযোগ বিছিন্ন নিয়ে এক পর্যায়ে পল্লী বিদ্যুৎের লোকজন তার ওপর হামলা চালায়। এতে বাবুলের মাথায় গুরুতর জখম হয়। এ সময় গ্রামবাসীরা এগিয়ে এসে পল্লী বিদ্যুৎের লোকজনদের প্রতিহত করে।
বোয়ালমারী জোনাল অফিসের ডিজিএম মো. সাইদুর রহমান বলেন, ১৩ মাসের সাড়ে ১৪ হাজার টাকা বিল বাকি। বিলও পরিশোধ করে না আবার লাইন কাটতেও দেয়না। জুন মাসে আমাদের প্রচুর চাপ। তাই বিল আদায়ে না হয় সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গিয়েছিল। কিন্তু তারা আমাদের লোকজনকে মারপিট করে আহত করে। আহত চারজনের মধ্যে ২জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরে ইউএনও এবং ওসি মহোদয়কে সাথে নিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এ ঘটনায় সমিতির পক্ষ থেকে মামলা করা হবে।
বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মাহমুদুল হাসান জানান, অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তানভীর হাসান চৌধুরী বলেন, সময়মতো বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ না করা অন্যায়। আমি গিয়েছিলাম এ নিয়ে আর কোন ঝামেলা যাতে না হয়। আর জনগণকে সচেতন করতে। যাতে ভবিষ্যতে এরকম না হয়। অভিযোগ দিলে দোষত্রুটি পুলিশ খুঁজে বের করবে।
Leave a Reply