1. khan261278@gmail.com : Oitijjho Bangla : Oitijjho Bangla
  2. oitijjhobangla24@gmail.com : Editor Panel : Editor Panel
  3. jmitsolution24@gmail.com : support :
বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:৫৭ অপরাহ্ন

জমি কিনে জালিয়াতির শিকার প্রবাসী দু’ভাই

  • প্রকাশিত : সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ৯৩ জন পঠিত

বোয়ালমারী প্রতিনিধি: ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় জমি কিনে জালিয়াতির শিকার হয়েছেন মালয়েশিয়া প্রবাসী দু’ভাই। নয় শতাংশ জমি কিনে বিপাকে পড়েছেন তারা। দলীল লেখক, তার সহকারী ও বিক্রেতার স্বজন রাজু আহম্মেদ নামে একজনের নিকট প্রতারণার শিকার হয়েছেন প্রবাসী দু’ভাই ।

জানা যায়, মালয়েশিয়া প্রবাসী মো. ইছা শেখ ও মোহাম্মদ ইসলাম শেখ নামে দুই সহোদর ১৩ লাখ টাকা বাজার মূল্যে উপজেলার বুড়াইচ ইউনিয়নের হেলাঞ্চা বাজারের সংলগ্ন ৯ শতাংশ জমি ক্রয় করেন মৃত প্রফেসর ইদ্রিস আহমেদের উত্তরাধিকারী স্ত্রী রোকসানা আহমেদ, ছেলে রাজিন আহমেদ, ২ কন্যা আইরিন আহমেদ ও তামান্না আহমেদের নিকট থেকে।

উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত ১১শতাংশ জমির মধ্যে ২০২৪ খ্রিস্টাব্দের ১৭ এপ্রিল আলফাডাঙ্গা সাব রেজিস্ট্রার অফিসে নগদ অর্থ বুঝিয়ে পেয়ে ৯ শতাংশ জমি ইছা শেখ ও মোহাম্মদ ইসলাম শেখকে সাব-কবলা মূলে দলিল রেজিস্ট্রি করে দেন প্রফেসর ইদ্রিস আহমেদের স্ত্রী, ১ পুত্র ও ২ কন্যা। কিন্ত দলিল লেখক রিপন মোল্যা, রাজু আহমেদের সাথে যোগসাজশ করে প্রথমে ১৩ লাখ টাকার দলিল সম্পাদন করলেও পরে দাতা-গৃহীতাকে কিছু না জানিয়ে জালিয়াতি ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে ৭ লাখ টাকা পণমূলে দলিলটি রেজিস্ট্রি করায়। এতে এক দিকে গৃহীতা প্রবাসী দু’ভাই যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অপর দিকে রাস্ট্র হারিয়েছে রাজস্ব।

প্রফেসর ইদ্রিস আহমেদ জীবদ্দশায় মরনব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসার জন্য ভাতিজা মো. রাজু আহম্মেদের নিকট জমিটি বিক্রির প্রস্তাব দেন। কিন্তু রাজু আহমেদ তা ক্রয় করতে অনিহা প্রকাশ করে। দীর্ঘদিন ক্যান্সারের সাথে যুদ্ধ করে মৃত্যু হয় প্রফেসর ইদ্রিস আহমেদের। পরবর্তীতে তার উত্তরাধিকারী স্ত্রী ও পুত্র,কন্যা হেলঞ্চা মৌজার বি,এস খতিয়ানের ৬৪৪ নং দাগ প্রস্তাবিত খতিয়ান নং ১৪১৮বি,এস দাগ নং ২৭৭৮ থেকে ৯ শতাংশ জমি ইছা শেখ ও মোহাম্মদ ইসলাম শেখের নিকট বাজার মূল্যে বিক্রি করেন।

২০২৪ সালে ১৭ এপ্রিল জমিটি একই উপজেলার শৈলমারী গ্রামের মো. ইউনুস মোল্যার ছেলে দলিল লেখক মো. রিপন মোল্যা(৫০) এর মাধ্যমে সাব কবলা মূলে আলফাডাঙ্গা সাব রেজিস্ট্রার অফিসে জমিটি রেজিস্ট্রি করে গৃহীতাকে ভোগদখলসত্ত্ব বুঝে দিতে দলিল লেখকের সাথে চুক্তিবদ্ধ হন। এসময় গৃহীতা মো. ইছা শেখ ও মোহাম্মদ ইসলাম শেখের নিকট থেকে দলিল লেখক রিপন মোল্যা সরকারি ফি ও দলিল লেখা খরচ বাবদ ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা গ্রহণ করে তার সহকারীসহ সে দলিল সম্পাদন কাজ করেন। এর ২ মাস পর আলফাডাঙ্গা সহকারী জজ আদালত ফরিদপুরের এক নোটিশে প্রবাসী দু’ভাই জানতে পারেন হেলেঞ্চা গ্রামের মৃত আজিজ আহমেদের ছেলে মো. রাজু আহমেদ মুসলিম আইনের বিধান মোতাবেক অগ্রক্রয় প্রিয়েমশন মামলা করেছেন। যেখানে তায়দাদ মূল্য ৭ লাখ টাকা উল্লেখ করা হয়েছে। দু’ভাই প্রবাসে অবস্থান করায় মো. ইসলাম শেখের স্ত্রী চায়না বেগম আলফাডাঙ্গা সাব রেজিস্ট্রার অফিসে দলিলের নকল ছায়াকপি উঠিয়ে নোটিশের সত্যতা দেখতে পেয়ে বুঝতে পারেন তারা প্রতারণার শিকার হয়েছেন। দলিল লেখক রিপন মোল্যার নিকট বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি ভুক্তভোগীদের জানান টাইপে ভুল হয়েছে ১০ হাজার টাকা দিলে তিনি সংশোধন করে দিবেন। তার চাহিদা মাফিক টাকা দেওয়ার পরও সংশোধন না করে দিলে মো. ইসলাম শেখের স্ত্রী মোছা. চায়না খানম আলফাডাঙ্গা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর একটি অভিযোগ দেন দলিল লেখকের বিরুদ্ধে সেখানেও ভুল স্বীকার করে সংশোধনের সময় চেয়ে নেন। কিন্তু দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও সংশোধন না করে দেওয়ায় ফরিদপুর আমলী আদলত ০৯ এর বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ২০২৫ সালের মার্চ মাসের ত তারিখে পেনেল কোডের ৪০৬, ৪২০, ১০৯ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন। যা তদন্তের জন্য ফরিদপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)কে দায়িত্ব দেওয়া হয়। পিবিআই কর্তৃক তদন্তে দলিল লেখক, তার সহকারী ও অগ্রক্রয় মামলা কারি রাজু আহমেদ দোষী সাব্যস্ত হয়। এর পরেও রাজু আহমেদ স্থানীয় ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় প্রবাসী দু’ভাইয়ের ক্রয়কৃত জমিতে বাড়ি নির্মাণের উদ্দেশ্য মাটি ভরাট করতে বিভিন্নভাবে বাঁধা দিয়ে যাচ্ছে।

ভুক্তভোগী ইছা শেখ মুঠোফোনে বলেন – রাজু আহমেদ নানা ভাবে আমাদের হয়রানি করছে। রোকসানা বেগম আমাদের জমির সীমানা বুঝিয়ে দিতে আমিন দিয়ে মাপামাপি করে সীমানা খুঁটি গেড়ে দিলেও সে তা উঠেয়ে ফেলেছে। জমিতে মাটি ভরাট করতে করতে গেলে সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে বাঁধা দেন রাজু ও তার লোকজন। অনেক কষ্ট করে প্রবাসে থেকে ঋণ করে জমিটি কিনেছি। দলিল লেখক আমাদের বিশ্বাস ভঙ্গকরে রাজু আহমেদের কাছ থেকে মোটা টাকা খেয়ে আমাদের সাথে প্রতারণা করেছে। এই প্রতারক চক্রের লাইসেন্স বাতিল সহ উপযুক্ত বিচার চাই।যাতে আমার মতো কারো সরল বিশ্বাসের সাথে প্রতারণা না করতে পারে।
সরেজমনে অগ্রক্রয় মামলাকারী মো. রাজু আহমেদ বাড়িতে গেলে তিনি কৌশলে গা-ঢাকা দেন পরে তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয় নাই।

দলিল লেখক রিপন মোল্যা বলেন – আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগগুলো মিথ্যা। তারাই প্রথমে ১৩ লাখ টাকা রেজিস্ট্রি করতে বললেও কিছুদিন পর ৭ লাখ টাকা রেজিস্ট্রি করতে বলায় আমি তা করে দিয়েছি।

এ বিষয়ে আলফাডাঙ্গা সাব রেজিস্ট্রার সুজন বিশ্বাস জানান- বিষয়টি অবগত আছি। জমিটি নিয়ে আদালতে মামলা বিচারাধীন রয়েছে তাই এ বিষয়ে মন্তব্য করতে চাই না। তবে দলিল লেখক দোষী সাব্যস্ত হলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2025
Development by : JM IT SOLUTION
error: Content is protected !!