শারমিন রহমান : জুলাই বিপ্লবের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে শিক্ষা বৈষম্য রোধে হুমকির মুখে পড়েছিলো ফরিদপুরের বোয়ালমারীর একমাত্র নারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কাজী সিরাজুল ইসলাম মহিলা কলেজ। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, অধ্যক্ষের অপসারণ দাবি , অভিভাবক নির্বাচন ও এক বছরে তিনবার সভাপতি রদবদলের মুখে হুমকির মুখে পড়ে শিক্ষার পরিবেশ।
মারাত্মক বিপর্যয়ের মুখে কলেজটির সুনাম অক্ষুণ্ণ রাখতে কলেজ পরিচালনার হাল ধরেছেন কলেজটির প্রতিষ্ঠাতার কন্যা, রাজধানীর স্বনামধন্য স্বর্ণালংকার বিক্রয় প্রতিষ্ঠান আমীন জুয়েলার্সের স্বত্বাধিকারী কাজী শাহারীন ইসলাম। সভাপতির দায়িত্ব নিয়েই শিক্ষার মানোন্নয়নে ছুটে আসেন পিতার হাতে গড়া প্রতিষ্ঠানে, বরণ করে নেন নবাগত শিক্ষার্থীদের। একাগ্রচিত্তে শোনেন শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সমস্যা আর সমস্যা উত্তোরণের প্রতিশ্রুতি পেয়ে আনন্দে মেতে উঠেন প্রতিষ্ঠানটির সবাই ।
এক আনন্দঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয় কলেজটির নবীন বরন ঘিরে। নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে অনুষ্ঠিত হলো কলেজটির একাদশ, দ্বাদশ ও অনার্স ১ম বর্ষের ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের আনুষ্ঠানিকভাবে বরণ করে নেওয়ার অনুষ্ঠান । এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কলেজটির প্রতিষ্ঠাতা, ফরিদপুর -১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সিরাজুল ইসলাম তনয়া, কলেজ পরিচালনা পর্ষদেরের নতুন সভাপতি কাজী শাহরীন ইসলাম। তার আগমনে প্রাণের উচ্ছ্বাসে মেতে উঠে প্রতিষ্ঠানটি। শিক্ষকদের বকেয়া বেতন, শিক্ষার্থীদের সমস্যা, অবকাঠামো উন্নয়নসহ নানাবিধ সমস্যা উত্তরণে প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। শিক্ষার পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে সকলকে এক হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান কাজী শাহারীন ইসলাম।
প্রধান অতিথি কাজী শাহরীন ইসলাম তাঁর বক্তব্যে বলেন, এই প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা আমার পিতা আলহাজ্ব কাজী সিরাজুল ইসলাম। তাঁর স্বপ্ন এই এলাকার নারীদের উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করা। আমরা সকলের সহযোগিতায় কলেজটিকে আরও উন্নত করতে বদ্ধ পরিকর। শিক্ষকদের প্রতি আহবান রাখেন তারা যেন, শিক্ষার্থীদের নিজেদের সন্তান মনে পাঠদান করেন। তাদের মধ্যে যতটুকু জ্ঞান-গরিমা আছে তার সবটুকু যেনো শিক্ষার্থীরা পায়। শুধু পড়ালেখায় নয়, আদর্শ মানুষ হিসেবে প্রতিটি শিক্ষার্থী যেনো নিজেকে গড়ে তুলতে পারে। অভিভাবকদের প্রতি অনুরোধ রাখেন তাদের মেয়েরা যেনো নিয়মিত কলেজে আসে। মোবাইলের অপব্যবহার রোধে সকলকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন। এ কলেজের শিক্ষার্থীরা যদি উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারে দেশের বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে অবদান রাখতে পারে সেটা আমাদের জন্য গর্বের বিষয় হবে। আমার পিতার আদর্শ অনুসরণ করে আমিও কলেজটির অসমাপ্ত উন্নয়ন কাজ সমাপ্ত করতে চাই। সেজন্য সকলের সহযোগিতা চান তিনি।
কলেজটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ড. হোসনেয়ার পারভীনের সভাপতিত্বে এতেবিশেষ অতিথি ছিলেন বিদ্যোৎসাহী সদস্য শাহিনা আক্তার, বোয়ালমারী থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) আল আমিন প্রমুখ । এসময় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ খন্দকার আবু মোরসালিন, সহযোগী অধ্যাপক রবিন কুমার লস্কর,সহযোগী অধ্যাপক শিরীন হোসেন,সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ মজনু মিয়া, সহযোগী অধ্যাপক মো. আলমগীর হোসেন, প্রভাষক দিল আশরাফী প্রমুখ।
অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন সহযোগী অধ্যাপক মনিশা রাণী কুন্ডু, সহযোগী অধ্যাপক জেসমিন আক্তার, সহকারী অধ্যাপক কাকলী ও সহকারী অধ্যাপক মৃদুল কুমার বোস প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে অতিথিদের ফুলেল ও লাল গালিচা সংবর্ধনা দেয়া হয়। পরে শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
Leave a Reply