1. khan261278@gmail.com : Oitijjho Bangla : Oitijjho Bangla
  2. oitijjhobangla24@gmail.com : Editor Panel : Editor Panel
  3. jmitsolution24@gmail.com : support :
শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫, ০৭:২৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
বোয়ালমারীতে উৎসবমুখর পরিবেশে রথযাত্রা উৎসব অনুষ্ঠিত এক মৎস্যজীবীর বৈঠার আঘাতে মধুমতি নদীতে নিখোঁজ অপর মৎস্যজীবী বোয়ালমারীতে যৌথ বাহিনীর অভিযানে গাঁজা-ইয়াবাসহ আটক ৩ বোয়ালমারীতে সাবেক মেম্বারের বাড়িতে ডাকাতি, স্বর্ণালঙ্কার-টাকা লুট বোয়ালমারীতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গিয়ে মারামারি, আহত ৬ বোয়ালমারীতে পাটজাত পণ্য তৈরি ও হাতপাখা বাজারজাত করণ প্রশিক্ষণের উদ্বোধন বোয়ালমারীতে শেখ রাসেল শিশু পার্ক উদ্বোধন বোয়ালমারীতে বর্ণাঢ্য আয়োজনে যুবলীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিক উদযাপন দুর্গাপূজা উপলক্ষে বোয়ালমারী পুলিশের মতবিনিময় সভা ভাতা নয় পিতার মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি চান এক গণমাধ্যমকর্মী

স্বপ্নের ঠিকানা পেয়ে গৃহহীনদের চোখেমুখে আনন্দের ঝিলিক

  • প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ১৩ জুলাই, ২০২১
  • ২৩৯ জন পঠিত

আমীর চারু বাবলু: ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলায় গৃহহীন ও ভূমিহীনদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়ে খুশি উপকারভোগীরা। কয়েকমাস আগেও যারা ভূমিহীন ও গৃহহীন ছিলেন তারা কল্পোনাও করেননি যে মুজিববর্ষে পাবেন জমিসহ বাড়ি। কয়েকশত পরিবারের মত এরকমই একজন স্বামী পরিত্যক্তা ফাতেমা বেগম। আনন্দ আর উচ্ছ্বাসে আবেগাপ্লুত সে।

ফাতেমা জানান-“দীর্ঘদিন স্বামী আমাকে ছেড়ে আর একজনকে বিয়ে করে খোঁজ খবর রাখেনা, বাপেরও জমিজুমা নাই। পরের লাথিগুত খেয়ে কোন মত বেঁচে ছিলাম। প্রধানমন্ত্রীর আমারে এট্টা ঘর দিছে, দুই শতক জমি দিছে, মাথা গুজার একটা ঠাঁই পেয়েছি, আমি ভীষণ খুশি, আমি জীবনেও ভাবি নাই আমার একটা ঘর হবে।” কথা বলতে বলতে ফাতেমার দু’চোখ বেয়ে নেমে আসে আনন্দের অশ্রু।

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে নির্মিত প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘরগুলোর নির্মাণশৈলী ও গুণগতমান অনুমোদিত ডিজাইন প্রাক্কলন অনুযায়ী হয়েছে কিনা তা দেখার জন্য গণমাধ্যমকর্মীরা সরেজমিনে উপজেলার সাতৈর ইউনিয়নের আরাজী শিবানন্দপুর গেল সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন ফাতেমা। অপর উপকারভোগী খুশি বেগম। খুশি বেগমও স্বামী পরিত্যক্তা, এলাকার বিত্তবানদের বাড়িতে ঝি এর কাজ করে, কখনো-বা কাঁথা সেলায় করে কোন মতে জীবন জীবিকা নির্বাহ করেছে। খুশি বেগমের-না ছিল জমি, না ছিল ঘর। পরের ঘরে মানুষের দয়া দক্ষিণায় যদিও একটু ঠাঁয় মিলেছে কিন্তুু তা স্থায়ী হয়নি বেশি দিন।

খুশি বেগম জানান, “আমি জীবনে কল্পনাও করিনি আমার নিজের একটা ঘর হবে, হবে একটি ঠিকানা। সমাজের আর দশজনের মত বলতে পারবো ‘আমার বাড়ি’ যা স্বপ্নেও কোনদিন ভাবিনি, তা প্রধানমন্ত্রী আমাদের দিয়েছেন। আল্লাহ্র কাছে দু’হাত তুলে দোয়া করি প্রধানমন্ত্রী যেন ভাল থাকেন, সুস্থ্য থাকেন।” খুশি বেগম আরও জানান, “কয়দিন আগে  সাংবাদিক এসে আমাগো অনেক সুযোগ সুবিধে কইরে দিবি বলে আমাদের কয়জনরে ঘরের পিছনে পানিতে দাঁড় করিয়ে ছবি তুইলে নিছে। ” ঘর পেয়ে খুশি জামেলা বেগমও।

একই প্রকল্পের বাসিন্দা জামেলা বেগম জানান, “২৫ বছর আগে বিয়ে হয়েছিল, যৌতুক লোভী স্বামীর অত্যাচর-নির্যাতনে সংসার করতে পারিনি। বাপের বাড়িও জায়গা হয়নি, অবশেষে এখন প্রধানমন্ত্রীর জন্য নিজের একটা বাড়ি হয়েছে।” একটি জুট মিলে শ্রমিকের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে সে। জুট মিলের অন্য নারী শ্রমিকদের সাথে তার বসবাস। জুট মিলের নিকটবর্তী শিবানন্দপুর আশ্রয়ন প্রকল্পে নিঃস্ব ও গৃহহীন অন্যদের মতই একটি ঘর পেয়েছে সে, পেয়েছে দুই শতক জমি। শেখ হাসিনার জন্য তার একটি আশ্রয় হয়েছে। এতে উচ্ছাসিত জামেলা বেগম। জামেলা বেগম জানান, “ঘর পেয়েছি, পেয়েছি জমি। প্রধানমন্ত্রী শুধু ঘরই দেয়নি বিদ্যুৎ দিয়েছে, খাওয়ার পানির ব্যবস্থা করছেন। ঘর করার সময় আমরা প্রতিদিনই দেখভাল করেছি, ঘরের সামনে সামান্য নিচু জমি ছিল সেগুলোও মাটি দিয়ে ভরাট করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। আমরা প্রধানমন্ত্রীর এই ঋণ শোধ করবো কীভাবে?। দোয়া করি আল্লাহ শেখ হাসিনার হায়াতদারাজ করুক।”

ঘরহীন, ভূমিহীন ছিন্নমূল জীবন-যাপন করতেন শহর পরিচ্ছন্নতাকর্মী শাহাদৎ দম্পতি। এই দম্পতি থাকতেন বোয়ালমারী বাজারে এক গণ-শৌচগারে। শাহাদৎ মনে করতেন তাদের জন্মটাই পাপের বোঝা। কখনো সমাজের বৃত্তবানদের দয়ার পাত্র হয়ে, কখনোবা রাস্তার পাশে কোনমতে ঝুপড়ি ঘর তুলে আর সর্বশেষ গণ-শৌচাগারই হয়ে উঠেছিল তাদের বাসস্থান। বাজার পরিচ্ছন্নকর্মী এই দম্পতি স্বপ্নেও কখনো কল্পনা করেনি নিজেদের একটি ঘর হবে, হবে নিজের নামে এক টুকরো জমি। মুজিববর্ষে বোয়ালমারী ইউনিয়নের সৈয়দপুরে আশ্রয়ন প্রকল্পের শাহাদৎ দম্পতি পেয়েছে একটি ঘর।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঘর পেয়ে শাহাদৎ দম্পতি বেশ সুখেই দিনযাপন করছে। সৈয়দপুরে প্রথম ধাপের এই প্রকল্পের আওতায় নির্মাণ করা হয়েছে ১০টি ঘর। মাঝা-মাঝিতে নিচু জমি হওয়ায় বৃষ্টিতে পানি জমতে পারে তাই পানি নিষ্কাশনের নির্মান করা হয়েছে ড্রেন। গুনবহা ইউনিয়নের ধোপাপাড়া আশ্রয়ন প্রকল্পে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে মোট ২০টি ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। এখানেও বৃষ্টিতে যাতে জলবদ্ধতা সৃষ্টি না হয়, সেজন্য ড্রেন নির্মাণ করা হচ্ছে। সাতৈর ইউনিয়নের ডোবরা আশ্রয়ন প্রকল্প ঘেঁষা একটি জলাশয় থাকায় ভবিষ্যতে ঝুঁকি এড়াতে নির্মাণ করা হয়েছে গাইড ওয়াল, যাতে বৃষ্টি বা বন্যার পানিতে মাটি ধুয়ে গিয়ে ঝুঁকির সৃষ্টি না করে। একই চিত্র দেখা গেছে বাগডাঙ্গা আশ্রয়ন প্রকল্পেও।

বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঝোটন চন্দ জানান, “মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী বোয়ালমারীতে গৃহহীন-ভূমিহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করার লক্ষ্যে নির্মাণ করা হয়েছে দুইকক্ষ বিশিষ্ট ৩১৫টি সেমিপাকা ঘর যা ইতোমধ্যেই সুবিধাভোগী গৃহহীনদের দুই শতাংশ জমির মালিকানাসহ হস্তান্তর করা হয়েছে। গৃহগুলো নির্মাণশৈলী ও গুণগতমান অনুমোদিত ডিজাইন প্রাক্কলন অনুযায়ী হয়েছে। আমরা কাজগুলো সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষন করেছি। বৈরী আবহাওয়া, অতি বৃষ্টি, করোনা কালীন প্রতিকূল অবস্থায় শ্রমিক সংকট থাকায় গৃহগুলো নির্মাণে একটু বেগ পেতে হয়েছে। কোথাও সমস্যা সৃষ্টি হলে তড়িৎ গতিতে সেসব সমস্যা সমাধান করে কাজের গুনগত মান নিশ্চিত করেই নির্মাণ করা হয়েছে এইসব গৃহ। কয়েকটি প্রকল্পে বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতা হতে পারে, তাই নির্মাণ করা হয়েছে জলনিষ্কাশন ড্রেন ও গাইড ওয়াল। ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য গৃহনির্মান সম্পন্ন করে আমাদের কাজ শেষ হয়ে যায়নি, বরং আগামী দিনগুলোতে এই পরিবারগুলোর পাশে থাকতে বোয়ালমারী উপজেলা প্রশাসন বদ্ধপরিকর।”

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2025
Development by : JM IT SOLUTION
error: Content is protected !!