আমীর চারু বাবলু/সুমন খান : বৈশ্বিক মহামারি করোনার প্রাদ্যুর্ভাবে বিপর্যস্ত সারাবিশ্ব, মানুষ ভাইরাসের কারণে হতাশাগ্রস্থ, আতংকিত। একদিকে মহামারি অন্যদিকে সংক্রমণ রোধে কার্যকারী দাওয়া ঘরে থাকা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নীতিমালা মেনে সরকারও তাই সারাদেশে আরোপ করেছে কঠোর বিধিনিষেধ এতে কর্মহীন হয়ে পড়েছে মধ্যবিত্ত ও নিন্মায়ের মানুষ।

সারাদেশের মত্যে করোনা ভাইরাসের কারনে গৃহবন্ধি বোয়ালমারী পৌরসভার বাসিন্দারাও। দেশব্যাপী সর্বাত্মক লকডাউনের এক সপ্তাহ আগে থেকেই সংক্রমণের উর্ধগতির কারনে ফরিদপুর জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি বোয়ালমারী পৌরসভা অঞ্চলে ২১ জুন থেকে ২৮ জুন পর্যন্ত এক সপ্তাহের কঠোর বিধি নিষেধ আরোপ করে। ফলে সারাদেশের মানুষের এক সপ্তাহ আগেই গৃহবন্দি হয়ে পড়ে পৌরসভাটির সাধারণ মানুষ, সবচেয়ে বিপাকে পড়ে মধ্যবিত্ত ও নিন্মায়ের মানুষ।

এক দিকে করোনার মরণাঘাতি ছোবল অপর দিকে প্রশাসন ও সরকারের সর্বাত্মক বিধিনিষেধে কর্মহীন পৌরবাসী যাতে কেউ কষ্টে না থাকে, অভুক্ত না থাকে তার জন্য বোয়ালমারীর পৌর মেয়র, জনতার মেয়র সেলিম রেজা লিপন নিয়েছেন নানা প্রদক্ষেপ। সাধারণ মানুষের প্রতি সাহায্য-সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে তাদের সুখেদুঃখে পাশে অবস্থান নিয়েছেন তিনি। তৎক্ষণাৎ সিদ্ধান্ত নিয়ে জনতার মেয়র সেলিম রেজা লিপন গৃহবন্ধি মানুষের কল্যাণে পৌরসভার তহবিল ও প্রধানমন্ত্রীর মানবিক অনুদান থেকে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, চা-দোকানদার, সেলুন ব্যবসায়ী, হোটেল কর্মচারী, ভ্যানচালক, মটর শ্রমিক, নির্মাণ শ্রমিকসহ নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত ১ হাজার ৮শত পরিবারকে ৫০০টাকা করে নগদ আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন।

দিন আনে দিন খায় এমন নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী যারা ব্যবসা বাণিজ্য করতে না পারায় অসহায় হয়ে পড়েছেন। পরিবার-পরিজন নিয়ে পড়েছেন বিপাকে তাদের মধ্যে এ আর্থিক সুবিধা দেওয়া হয়। বিশেষ করে মধ্যবিত্ত জনগোষ্ঠীর কথা মাথায় রেখেছেন তিনি, যারা কারো কাছে মুখ খুলে কিছু বলতেও পারছেন না, আবার করোনার বিধিনিষেধে হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্থ এসব বিবেচনায় নিয়ে পরিষদের কাউন্সিলরদের সহযোগীতা নিয়ে গোপনে নগদ ও খাদ্য সহায়তা দিয়েছেন। মসজিদের ইমামসহ বেশ কয়েকটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এ আর্থিক সুবিধার আওতায় এসেছে।

এ ছাড়া প্রতিদিনই নিজ তহবিল থেকে সাধ্যমত সাহায্য অব্যাহত রেখেছেন। একই সঙ্গে করোনা প্রতিরোধে মাঠে কাজ করছেন তিনি। পৌরসদর বাজার সহ পৌরাঞ্চলে নিজ হাতে মাস্ক, স্যানিটাইজার, সাবান বিতরণ করাসহ মানুষের মাঝে সচেতনতা বাড়াতে লক-ডাউনের আগে থেকেই প্রতিদিনই বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, পৌর অঞ্চলের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে দোকানে দোকানে ঘুরে ঘুরে মাস্ক ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করেছেন মেয়র সেলিম রেজা লিপন। করোনায় আক্রান্ত রোগীদের জন্যেও নিয়েছেন পদক্ষেপ। যেসব করোনা রোগি বাড়িতে চিকিৎসাহ সেবা নিচ্ছেন তাদের শ্বাসকষ্ট হলে বা অক্সিজেন সংকট দেখা দিলে তাদের জন্য ৪টি অক্সিজেন সিলিন্ডার নিজ তত্ত¡াবধানে তৈরি রেখেছেন, স্থানীয় কাউন্সিলর ও নিজের মোবাইল নাম্বারে চালু করেছেন হটলাইন, করোনা রোগী ও তাদের পরিবার ফোন করলেই এসব অক্সিজেন নিয়ে স্বেচ্ছাসেবকরা পৌঁছে যায় অক্সিজেন সংকটে থাকা রোগীদের বাড়ী। পৌর বাসিন্দারা কেউ করোনায় আক্রান্ত হলে তাদের জন্য নানা প্রকার ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ ফলমুল, সবান, স্যানিটাইজার, মাস্ক ও উপসর্গ অনুযায়ী ওষধপত্র স্বাস্থ্য বিধি মেনে প্রতিনিধিদের মাধ্যমে পাঠিয়েছেন তিনি।

ইতোমধ্যেই পৌরসভার ৪ হাজার ৬২১ টি পরিবারকে ভিজিএফ এর ১০ কেজি করে খাদ্য সহায়তা দেওয়া শুরু হয়েছে। এছাড়া জিআর প্রকল্পের আওতায় ২ হাজার ২শত জনকে ১০ কেজি করে চাউল এর খাদ্য সহায়তা দেওয়া হবে। ঈদের আগেই এ খাদ্য সহায়তা দেওয়া হবে বলে জানান পৌর মেয়র সেলিম রেজা লিপন। তিনি আরও বলেন- মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা মোতাবেক পৌরবাসীর জন্য আমাদের সাধ্যমত বিভিন্ন সহায়তা প্রদান করার চেষ্টা করেছি। আমাদের বা সরকারে একার পক্ষে এ দুর্যোগ মোকাবেলা করা সম্ভব নয়, এ জন্য সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসতে হবে। করোনা মোকাবেলা আমাদের সবার সচেতন হতে হবে। পৌরবাসীকে বলবো অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করুন। স্বাস্থবিধি মেনে চলুন। ঘরের বাইরে গেলে নিরপদ দূরত্ব বজায় রাখুন।