টাইমস বাংলা ডেস্ক – বৃহস্পতিবার বিজয়া দশমীর রাত। আচমকাই জল বেড়ে গিয়েছিল নদীতে। হড়পা বানে ভেসে যেতে থাকেন অনেকে। তখনই হলুদ শার্ট পরা এক যুবকও দাঁড়িয়েছিলেন নদীর পাড়ে। সবাই যখন প্রাণ বাঁচানোর জন্য নদী থেকে উঠে পড়ার আপ্রাণ চেষ্টা করছেন। তখন নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন ওই যুবক। সোশ্য়াল মিডিয়ায় ঘুরছে ওই যুবকের ছবি। নাম মানিক মহম্মদ। আসলে নিজের জীবনকে তুচ্ছ করে ওই খরস্রোতা নদীর বুক থেকে তিনি অনেকের জীবন বাঁচাতে চেয়েছিলেন। ফেসবুকের একটি ভিডিয়োতে জানানো হয়েছে, তিনি মানিক মহম্মদ। সমাজকর্মী বলেই এলাকায় পরিচিত। জলপাইগুড়ির বাসিন্দা। আর পাঁচজনের মতো তিনিও ঠাকুর বিসর্জন দেখতে গিয়েছিলেন। কিন্তু চোখের সামনে এই বিপর্যয় দেখে তিনি নিজেকে স্থির রাখতে পারেননি। এই নদীকে তিনি ভালো করেই চেনেন। জানেন হড়পা বান কী ভয়ঙ্কর হতে পারে। কিন্তু বাড়িতে তো ছোট বাচ্চা, স্ত্রী, বৃদ্ধ বাবা মা, কারোর কথা চিন্তা না করে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন মানিক। মানিক মহম্মদ। তিনি আজ মালবাজারের রিয়েল হিরো। পা কেটে গিয়েছে। তবুও তিনি বাঁচিয়েছেন ১২-১৪ জনকে। মানিক জানিয়েছেন, আমি নদীকে ভয় পাই না। মহানন্দার তিরে বড় হয়েছি। আমি যখন যাই তখন দেখি নদীতে জল বাড়ছে। পাশের একজনের হাতে মোবাইলটা ধরিয়ে দিই। এরপর ঝাঁপ দিই নদীতে। পর পর কয়েকজন ওঠাই। এরপর পা কেটে যায়। তখন একজন রুমাল দেয়। সেই রুমাল দিয়ে পায়ে বেঁধে আবার নদীতে ঝাঁপ দিই। সব লোক উদ্ধার হওয়ার পরে হাসপাতালে যাই। আমি নদীকে ভয় পাই না। নদীতে ছোটবেলা থেকে স্নান করি। আমি জানি নদী কী ভয়ঙ্কর হতে পারে। বলছেন মানিক। নীলাঞ্জন মাইতি নামে এক ব্যক্তি মানিকের কথা সামনে আনেন সোশ্যাল মিডিয়া। তবে শুধু মানিক মহম্মদ নন, ডুয়ার্সের অনেক যুবকই ওই রাতে দুর্গতদের প্রাণ বাঁচাতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন খরস্রোতা নদীতে। খোদ মুখ্যমন্ত্রীও সেই স্থানীয় যুবকদের সাহসিকতাকে প্রশংসা করেছেন।