টাইমস বাংলা ডেস্ক – বাংলার দুর্গাপুজোকে ইউনেস্কো ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজের তকমা দিয়েছে। তার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পথে নেমেছিলেন বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা নিয়ে। তখন বিজেপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, কেন্দ্রীয় সরকার না থাকলে এই তকমা জুটত নাকি। এই সবকিছুর কৃতিত্ব কেন্দ্রের। রাজ্য নিজের নামে চালানোর চেষ্টা করছে। তারপর দেখা যায় এই স্বীকৃতির পিছনে যিনি রয়েছেন সেই ইতিহাস গবেষক তপতী গুহঠাকুরতা–কে সম্মানিত করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তাতে তিনি আনন্দিত হলেও অভিমান ঝড়ে পড়ল নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে। সর্বভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমে তিনি জানিয়েছেন তাঁর অভিমান–ক্ষোভের কথা।
ওই সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তপতীদেবী আক্ষেপ করে বলেন, ‘আমাকে এবং আমার টিমকে ধন্যবাদ জানানোর মতো ন্যূনতম সৌজন্যটুকুও দেখায়নি মোদী সরকার।’ আর এই মন্তব্য এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে পড়েছে। তাতে বঙ্গ–বিজেপির নেতাদের অস্বস্তি চরমে উঠেছে। এমনকী এই ইস্যুতে মুখে কুলুপ এঁটেছেন তাঁরা। শমীক ভট্টাচার্য, শুভেন্দু অধিকারী, দিলীপ ঘোষ এবং সুকান্ত মজুমদার এই সরকারের সমালোচনা করেছিলেন। যখন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা করেছিলেন।
বাংলার দুর্গোপুজোকে ইউনেস্কোর দরবারে স্বীকৃতি আদায়ের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রক ইতিহাসবিদ তপতী গুহঠাকুরতার দ্বারস্থ হয়। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গবেষণা করেছেন তিনি। কৃতী অধ্যাপক তপতী গুহঠাকুরতা কলকাতার সেন্টার ফর সোশ্যাল স্টাডিজে দীর্ঘদিন কাজও করেছেন। কলকাতার ঐতিহ্য, ইতিহাস বিষয় নিয়ে গবেষণা করেছেন তিনি। আর তাঁর গবেষণাই ইউনেস্কো কর্তাদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলেছিল। ২০২১ সালে ইউনেস্কো জানিয়ে দেয়, দুর্গাপুজোর সঙ্গে বাঙালির এবং মানবতার গভীরতা অনুধাবন করে এই পুজোকে ঐতিহ্যের তকমা দেওয়া হচ্ছে। তখনই বাংলার পুজোকে বিশ্বজনীন করে তুলতে উদ্যোগ নিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
১ সেপ্টেম্বর কলকাতার রেড রোডে ইউনেস্কোকে ধন্যবাদজ্ঞাপন অনুষ্ঠানের মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী তপতীদেবীকে উপযুক্ত সম্মানে ভূষিত করেন। তাঁকে উত্তরীয়, ডোকরার বড় দুর্গামূর্তি দিয়ে বিশেষ সম্মানে ভূষিত করা হয়েছিল। আর এই তপতীদেবীই উৎসবের মরশুমে অভিমানের কথা শুনিয়ে সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘এসব নিয়ে রাজনৈতিক তরজা চলছে, তাতে আমি অবাক হইনি। মনে রাখবেন, সমস্ত রাজনীতিকের সাফল্যের পিছনেই ভাল গবেষণার কাজ ও মেধাবীদের ভূমিকা থাকে। কিন্তু এটাই দুর্ভাগ্যজনক যে এত বড় একটা সাফল্যের পরও সংস্কৃতি মন্ত্রকের পক্ষ থেকে কেউ আমাদের একটা ধন্যবাদসূচক বার্তাও পাঠাল না।’