টাইমস বাংলা ডেস্ক -,গঙ্গা–পদ্মা ভাঙন সমস্যা বড় আকার নিয়েছে। আর তা নিয়ে তিক্ত হল রাজ্য–কেন্দ্র সম্পর্ক। মালদা, নদীয়া এবং মুর্শিদাবাদ জেলার এই সমস্যা নিয়ে গত ২১ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই চিঠিতে গঙ্গা–পদ্মার দু’পারে ৩৭টি জায়গায় প্রয়োজনীয় ৫৭১ কোটি টাকা ব্যয়ে ভাঙন প্রতিরোধের কাজ শুরু করার আর্জি জানিয়েছিলেন তিনি। এবার সেই চিঠির উত্তর এসে পৌঁছল রাজ্য সরকারের কাছে। যা দেখে চোখ কপালে উঠেছে নবান্নের উচ্চপদস্থ কর্তা থেকে সেচ দফতরের আধিকারিকদের।
নবান্ন সূত্রে খবর, এই কাজের দায় একেবারে ঝেড়ে ফেলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। শুধু তাই নয়, এই বৃহৎ প্রকল্পের দায়িত্ব শুধুমাত্র রাজ্য সরকারের ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়েছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। কেন্দ্রের এই আচরণে ক্ষুব্ধ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই পদক্ষেপকে বাংলার প্রতি বিমাতৃসুলভ আচরণ উল্লেখ করে কেন্দ্রকে পাল্টা চিঠি দেওয়ার পথেই এগোচ্ছে নবান্ন। মুখ্যমন্ত্রী ফের কেন্দ্রকে চিঠি লিখছেন। সেখানে বুঝিয়ে দেওয়া হবে প্রকৃত কারণ। কেন্দ্রের পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, কেন্দ্রের দায়িত্ব হল ফরাক্কা ব্যারেজের উর্ধ্ব এবং নিম্নপ্রবাহের দু’দিকের ১৯ কিলোমিটারে ভাঙন রোধের কাজ সুনিশ্চিত করা। বাকি এলাকার কাজ করতে হবে রাজ্যকেই।
গত ১৫ বছরে নদী ভাঙনের ফলে মালদা, নদীয়া এবং মুর্শিদাবাদ জেলায় সরকারি–বেসরকারি মিলিয়ে প্রায় এক হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে। নদী গর্ভে তলিয়ে গিয়েছে প্রায় ২৮০০ হেক্টর কৃষি জমি। তাই চিঠিতে ক্ষয়ক্ষতির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ভাঙনের আসল কারণ তুলে ধরেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
জানা গিয়েছে, ২০০৫ সালে ফরাক্কা ব্যারেজের দু’দিকে মোট ১২০ কিলোমিটার ভাঙন প্রতিরোধ নিজেদের অধীনে নিয়ে এসেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। তবে ২০১৭ সালে সেই নিয়মে বদল আনা হয়। যার জেরে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে রাজ্যের একার পক্ষে এই ভাঙন প্রতিরোধের কাজ চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। তারপরও মানুষের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে প্রায় ২৫০ কোটি টাকা খরচ করেছে রাজ্য। এই সমস্ত তথ্য তুলে ধরে ভাঙন রোধের কাজ দ্রুত শুরু করতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে কেন্দ্র যে রাজ্যের দাবি মানছে না, তা তারা জানিয়েছে চিঠিতে।