টাইমস বাংলা ডেস্ক – ফিফার নির্বাসন নিয়ে এদিন কোনও নিষ্পত্তি হল না সুপ্রিম কোর্টে। ফিফার সঙ্গে সমস্যা মেটানোর জন্য কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রককে দায়িত্ব দিয়ে সোমবার ফের শুনানির দিন ধার্য করেছে সুপ্রিম কোর্ট। তবে এদিনের সুপ্রিম কোর্টে শুনানির পর একটা ব্যাপার পরিস্কার, সিওএ নয়, সমস্যা মেটানোর পুরো ব্যাপারটা এখন কেন্দ্রীয় ক্রীড়া দফতরের। তারাই সিওএ, রাজ্য সংস্থা এবং ফিফার সঙ্গে কথা বলে একটা সমঝোতা সূত্র বার করার চেষ্টা চালাচ্ছে। যাতে খুব দ্রুত ভারতীয় ফুটবল থেকে নির্বাসন উঠে যায়। তবে পুরো ব্যাপারটার দিকে নজর রাখছেন রাজ্য সংস্থার কর্তারা। এদিন দিল্লিতে ৩৬জন রাজ্য সংস্থার কর্তারা একসঙ্গে মিটিং করেন পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করতে।
এদিন সকাল থেকে আপামর ভারতীয় ফুটবল সমর্থকদের নজর ছিল সুপ্রিম কোর্টের দিকে। কারণ, নির্বাসনের ফলে শুধুই জাতীয় দলের খেলা বন্ধ নয়, দেশের থেকে সরে যাবে অনূর্ধ্ব-১৭ মহিলা বিশ্বকাপও। যা দেশের পক্ষে খুবই অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। আর এই কারণেই কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রক উদ্যোগী হয়ে উঠেছে সমস্যা সমাধান করে দেশে বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য।
এদিন সুপ্রিম কোর্টে ছিল এআইএফএফ বনাম রাহুল মেহরা মামলার শুনানি। আর সেদিকেই তাকিয়ে ছিল ভারতীয় ফুটবল মহল। কারণ, কী কী শর্তে নির্বাসন উঠবে, তার নির্দেশিকাও দিয়ে দিয়েছিল ফিফা।
ফলে এদিন সবার নজর ছিল সুপ্রিম কোর্টের দিকে। বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি এএস বোপন্না এবং বিচারপতি জেবি পার্দিওয়ালার বেঞ্চে এদিন মামলার শুনানি শুরু হয়। যেখানে সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহতা আদালতকে জানান, পুরো বিষয়টা নিয়ে ফিফার সঙ্গে কথা বলছে কেন্দ্র। এর আগে সিওএ-কে সঙ্গী করে ফিফার সঙ্গে তাদের দুটি মিটিংয়ের কথাও তুলে ধরেন তিনি। ফিফার সঙ্গে কথা বলে নির্বাসন তোলার ব্যাপারে অনেকটাই আশাবাদী, সেই কথাও বলা হয়।
ফিফার নির্বাসনের জন্য মোহনবাগানের এএফসি কাপে অংশগ্রহণ নিয়ে যে সমস্যা দেখা দিয়েছে, সেই প্রসঙ্গও ওঠে। মহিলাদের এশিয়ান ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপ খে লতে উজবেকিস্তানে পৌঁছে গিয়েছে গোকুলাম। কিন্তু এদিনই এএফসির পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, ফিফার নির্বাসনের জন্য গোকুলাম দলকে খেলতে দেওয়া হবে না। বাকি দলগুলিকে নিয়ে শুরু হয়ে যাচ্ছে এশিয়ান ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপ। এরপরই মামলা সোমবার পর্যন্ত স্থগিত রেখে ফিফার নির্বাসন দ্রুত তুলে নিয়ে দেশে অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ আয়োজনে সদর্থক ভূমিকা নিতে কেন্দ্রকে নির্দেশ দেয় আদালত।
ফিফার সঙ্গে আলোচনার পর নির্বাচন সংক্রান্ত ইস্যুতে সিওএ-দের নির্বাচনী খসড়া থেকে অনেকটাই সরে এসে দ্রুত সমস্যার সমাধান করতে চাইছে কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রক। যেমন আগে সিওএদের প্রস্তাবে ছিল, রাজ্য সংস্থাগুলির পাশাপাশি ফুটবলাররাও ভোট দেবেন। কিন্তু রাজ্য সংস্থাগুলির পাশাপাশি ফিফার আপত্তির পর সেই প্রস্তাব থেকে সরে এসেছে কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রক।
সিওএ-দের খসড়ায় ছিল, ১২জনের কার্যকরী কমিটি গড়তে হবে। যেখানে থাকবেন ৫জন ফুটবলার। এখন সেই প্রস্তাব থেকে সরে ফিফার সঙ্গে আলোচনায় সিওএ- জানিয়েছে, ২৩জনের কার্যকরী কমিটি গড়া হবে। যার মধ্যে আগের নিয়ম মতো ১৭জন কার্যকরী কমিটির সদস্য থাকবেন। বাকি ৬জন ফুটবলার। যাঁরা কার্যকরী কমিটিতে থাকলেও ভোটাধিকার পাবেন না। রাজ্য সংস্থা এবং ফিফার পরামর্শমতো নির্বাচনী বিধি নিয়ে এরকম বেশ কয়েকটি পয়েন্টে সহমত হয়ে গিয়েছে কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রক।
ফলে আশা করা হচ্ছে, ফিফার সঙ্গে আলোচনা করে সোমবারের মধ্যেই চূড়ান্ত কোনও জায়গায় আসতে পারবে কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রক। ফরে সোমবার সুপ্রিম কোর্টের শুনানি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে ভারতীয় ফুটবলের জন্য।