টাইমস বাংলা ডেস্ক – তৃণমূলের ‘সেকেন্ড ইন কমান্ড’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কি তবে দলের রাশ নিজের হাতে তুলে নিলেন? দক্ষিণ কলকাতা জুড়ে তৃণমূল কংগ্রেসের হোর্ডিংয়ে তেমনই জল্পনা শুরু হয়েছে। শাসক দলের হোর্ডিংয়ে শুধুই অভিষেক। সেখান থেকে উধাও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বর্তমানে জোড়া গ্রেফতারিতে বেশ বেকায়দায় শাসক দল। প্রথমে পার্থ চট্টোপাধ্যায়, পরে অনুব্রত মণ্ডল। দলের দুই হেভিওয়েট দুর্নীতির মামলায় হাজতে যেতেই দলের ভাবমূর্তি রক্ষায় উঠে পড়ে লেগেছে দল। পার্থকে ইতিমধ্যেই ছেঁটে ফেললেও অনুব্রতর পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন মমতা। এই আবহে দক্ষিণ কলকাতা জুড়ে দলনেত্রীর বদলে দলের সাধারণ সম্পাদকের হোর্ডিংয়ের ছড়াছড়িতে জল্পনা ছড়িয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
এসএসসি দুর্নীতি মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতার হতেই অভিষেকের তৎপরতা দেখা গিয়েছিল। এসএসসি চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে নিজে বৈঠক করেছিলেন অভিষেক। তাঁর সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু স্বয়ং। তবে অভিষেকই যেন বৈঠকের সর্বেসর্বা। এদিকে একাধিকবার অভিষেক বার্তা দিয়েছেন যে ইডি বা সিবিআই কোনও নেতাকে ডাকলে নির্ভয়ে যাওয়া উচিত। তবে অনুব্রত মণ্ডল সেই কাজ করেননি। বরং দশবার তলব করা হলেও তিনি গিয়েছিলেন মাত্র একবার। এই আবহে গ্রেফতার হয়েছেন তিনিও। তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে গরু পাচারকাণ্ডে। এরই পাশাপাশি অরূপ বিশ্বাস, ফিরহাদ হাকিমের মতো রাজ্যের হেভিওয়েট মন্ত্রীদের সম্পত্তি নিয়ে মামলা চলছে। সব মিলিয়ে বেশ অস্বস্তিতে তৃণমূল কংগ্রেস। এবং সেখানে দলকে রক্ষা করতে নিজের স্বচ্ছ ভাবমূর্তিকে কাজে লাগাতে চাইছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এই আবহে কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির উল্টোদিকেও অভিষেকের ছবি সম্বলিত হোর্ডিং। যাতে লেখা, ‘মানুষ যেভাবে চায়, সেভাবেই তৈরি হচ্ছে তৃণমূল।’
দলের পাশাপাশি মন্ত্রিসভাতে অভিষেকে প্রভাব বিস্তার সম্প্রতি লক্ষ্য করা গিয়েছে। মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণে অভিষেক ঘনিষ্ঠরা জায়গা করে নিয়েছেন। এর আগে পুর ভোটের সময় বর্ষীয়ান নেতা পার্থ এবং সুব্রত বক্সীর সঙ্গে অভিষেকের ‘মনোমালিন্য’র পর থেকে দলের একাংশ প্রকাশ্যে অভিষেকের সমর্থনে গলা ফাটিয়েছিল। দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব রুখতে সেই সময় দলের সব পদ বিলুপ্ত করেছিলেন মমতা। পরে অবশ্য অভিষেককে তাঁর পদ ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এবং ধীরে ধীরে ফের অভিষেককে সক্রিয় হতে দেখা যায় দলের কাজে। এই আবহে বিগত কয়েক মাসে দল যখন দুর্নীতির অভিযোগে জ্বর্জরিত, তখন তৃণমূলের ‘যুবরাজ’ ফ্রন্টফুটে খেলতে শুরু করেছেন। যুব সমাজকে দলের সঙ্গে রাখতে নিজের ভাবমূর্তিকে কাজে লাগাতে চাইছেন।