টাইমস বাংলা ডেস্ক – তখন সবে সিবিআই অনুব্রত মণ্ডলকে বোলপুরের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছে। সংবাদমাধ্যমে লাইভ টেলিকাস্ট দেখানো শুরু হয়েছে। ডিজিটাল মিডিয়ায় একের পর এক খবর আছড়ে পড়ছে। সঙ্গে ভিডিয়ো থাকছে পর পর। তোলপাড় হয়ে উঠেছে রাজ্য রাজনীতি। তখন প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি পার্থ চট্টোপাধ্যায় টিভির দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলেন। এরপর মাথা নীচু করে একটু পায়চারি শুরু করলেন। আবার তাকালেন টিভি স্ক্রিনে। দেখা হতেই কারারক্ষীদের প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন তিনি।
সূত্রের খবর, বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতির গ্রেফতারির খবর পার্থ চট্টোপাধ্যায় দেখে পায়চারি বাড়িয়ে দেন তিনি। প্রচুর কিছু যেন বলতে চান তিনি। এমনই দেখা যায় তাঁকে। ঠিক তখনই সেখানে হাজির হন কারারক্ষীরা। টিভি স্ক্রিন থেকে তাঁদের দিকে ঘাড় ঘুরিয়ে রক্ষীদের পার্থ প্রশ্ন করেন, ‘অনুব্রত কি এই জেলেই আসবে?’ এই প্রশ্ন করার পিছনে কারণ হল, বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছিলেন, অনুব্রতকে গ্রেফতার হতেই হবে। কারণ পার্থ ওখানে অপেক্ষা করছে। সেটাও তিনি টিভি স্ক্রিনে দেখেছেন।
শিক্ষক নিয়োগে ‘দুর্নীতি’ মামলায় গত ২২ জুলাই পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। সেই সূত্রেই তিনি প্রেসিডেন্সি জেলে। কিন্তু অনুব্রত সেখানে আসবে কিনা জিজ্ঞাসা করতেই কারারক্ষীরা জানিয়ে দেন, এখনও তাঁদের কাছে কোনও খবর আসেনি। এই শুনে তিনি আবার টিভির স্ক্রিনে চোখ রাখেন। একদা রাজনীতির ময়দানের সহকর্মী এখন সিবিআই হেফাজতে দেখে তিনি কি যেন ভাবছিলেন। এমন সময় পাশের সেলের এক বন্দি বলে ওঠেন, কেন্দ্রীয় সংস্থা এখন বেছে বেছে মোটা লোকদের ধরছে। এই নিয়ে হাসির রোলও ওঠে বলে সূত্রের খবর।
এই টিপ্পনি শুনে মাথা নীচু করে সেলের দিকে এগিয়ে যান পার্থ। তাঁর গ্রেফতারের ২০ দিনের মাথায় অনুব্রত মণ্ডলকে পাকড়াও করল সিবিআই। বৃহস্পতিবার রাখিবন্ধনের দিন বাড়ি ঘিরে অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করে সিবিআই আধিকারিকরা। এখন ১০ দিনের সিবিআই হেফাজতে রয়েছেন অনুব্রত। তাঁকে নিজাম প্যালেসে এনেছে সিবিআই। এখন অনুব্রত একেবারে ‘চুপ’ হয়ে গিয়েছেন। এই দেখে পার্থ চট্টোপাধ্যায় আবার ম্যাগাজিনে মুখ গুঁজে দেন।