টাইমস বাংলা ডেস্ক -২৪ জুলাই রাষ্ট্রপতি পদে মেয়াদ শেষ হচ্ছে রামনাথ কোবিন্দের। সংবিধানের ৬২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সেই পদ পূরণ করতে তাই আজকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। প্রায় ৪৮০০ সাংসদ এবং বিধায়ক দেশের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি বেছে নেওয়ার জন্য ভোট দেবেন আজ। নিউটাউনের হোটেল থেকে বিজেপি বিধায়কদের নিয়ে বিধানসভার উদ্দেশে রওনা হয়েছে বাস। বিজেপির প্রতীকে জিতে কয়েকজন বিধায়ক তৃণমূল কংগ্রেস যোগ দিয়েছেন। সুতরাং তাঁরা এনডিএ পদপ্রার্থীকে ভোট দেবেন না বলেই খবর। আবার এখনও যাঁরা বিজেপিতে আছেন তাঁদের মধ্যে কেউ যদি বিরোধী প্রার্থীকে ভোট দেন তাহলে সেটা বঙ্গ–বিজেপির কাছে তা চরম অস্বস্তিকর হবে। তাই ক্রস ভোটিং ঠেকাতে বিধায়কদের হোটেলে রাখা হয়েছিল। যশবন্ত সিনহাকে সমর্থন করছে কংগ্রেস, শরদ পাওয়ারের জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টি (এনসিপি), তৃণমূল কংগ্রেস, ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি, ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী), অখিলেশ যাদবের নেতৃত্বাধীন সমাজবাদী পার্টি, ন্যাশনাল কনফারেন্স, অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল সমর্থন করছে। মুসলিমিন (এআইএমআইএম), রাষ্ট্রীয় জনতা দল এবং অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টও (এআইইউডিএফ) বিরোধী রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থীকে সমর্থন করছে। অরবিন্দ কেজরিওয়ালের নেতৃত্বাধীন আম আদমি পার্টিও (এএপি) ঘোষণা করে যে তারা বিরোধীদের প্রার্থীকে সমর্থন করবে। বিভিন্ন রাজ্যে বিধায়কদের ভোটের মূল্য একেক রকম হয়। উত্তরপ্রদেশে প্রতিটি বিধায়কের ভোটের মূল্য ২০৮, তারপরে ঝাড়খণ্ড এবং তামিলনাড়ুতে বিধায়কদের ভোটের মূল্য ১৭৬। মহারাষ্ট্রে, এটি ১৭৫, পশ্চিমবঙ্গে ১৫১। এদিকে সিকিমে প্রতি বিধায়কের ভোটের মূল্য সাত, নাগাল্যান্ডে এটি নয় এবং মিজোরামে আট।আগামী ২১ জুলাই ভোট গণনা হবে। এবং বর্তমান রাষ্ট্রপতির মেয়াদ শেষ হলে ২৫ জুলাই শপথ নেবেন নয়া রাষ্ট্রপতি।সাধারণত সাংসদরা সংসদে এবং বিধায়করা নিজ নিজ রাজ্যের বিধানসভায় ভোট দিয়ে থাকেন। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে সাংসদরা বিধানসভায় এবং বিধায়করা সংসদে গিয়ে ভোট দিতে পারেন। এবার যেমন তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদরা বিধানসভায় ভোট দেবেন।সংবিধানের ৫৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ইলেক্টোরাল কলেজ পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ হয়ে থাকে। সব রাজ্যের বিধায়ক, কেন্দ্রশাসিত দিল্লি ও পুদুচেরির বিধায়ক, লোকসভা ও রাজ্যসভার সাংসদরা আজ ভোট দেবেন। আজ সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলবে ভোট গ্রহণ। দেশের সব বিধানসভা এবং সংসদে ভোটগ্রহণ চলবে। নির্বাচন কমিশন নির্দিষ্ট পেন এবং ব্যালট বক্স দিয়েছে। সাংসদ এবং বিধায়কদের জন্য পৃথক রঙের ব্যালট পেপার দেওয়া হয়েছে।মোট ১০ লাখ ৮৬ হাজার ৪৩১ ভোটের মধ্যে ৪৯ শতাংশ ভোট (৫ লাখ ৩২ হাজার ৩৫১) ইতিমধ্যেই রয়েছে এনডিএ-র কাছে। তাছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি দল দ্রৌপদীকে সমর্থন করার কথা জানিয়েছে। ওড়িশার শাসকদল বিজু জনতা দল (৩১,৬৮৬ ভোট), এআইএডিএমকে (১৪,৯৪০), শিবসেনা দ্রৌপদী মুর্মুকে সমর্থনের ঘোষণা করেছে। এদিকে কংগ্রেসের জোট সঙ্গী ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চাও ঘোষণা করেছে যে তারা দ্রৌপদী মুর্মুকেই সমর্থন করবে। তাছাড়া শিরোমণি অকালি দল, তেলুগুদেশম পার্টি, ওয়াইএসআর কংগ্রেস পার্টি, জনতা দল সেকুলার, বহুজন সমাজ পার্টিও সমর্থন করছে দ্রৌপদীকে। এনডিএ মনোনীত প্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মু আজকের নির্বাচনে যশবন্ত সিনহার থেকে অনেকটাই এগিয়ে আছেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। রাজনৈতিক দলগুলির ঘোষণা মতো প্রায় ৬০ শতাংশ ভোট পেতে পারেন দ্রৌপদী মুর্মু। প্রসঙ্গত, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জিততে ন্যূনতম ৫০ শতাংশ যোগ একটি ভোট পেতে হয়।