অনিসা মান্না,কলকাতা, কলকাতা – একমাত্র দাদার ভাইফোঁটার আগেই মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছে সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বোনেরা। সুব্রত বাবুর বোন বুলবুল চট্টোপাধ্যায় বললেন ‘দাদা, আমার হাতের নাড়ু খেতে চেয়েছিল, বলেছিলাম ভাইফোঁটার দিন…’। এইটুকু বলেই ঝরঝরিয়ে কেঁদে ফেললেন তার বোন। শুক্রবার সকালে সুব্রতের বোন তনিমা চট্টোপাধ্যায় জানান, ‘ভাইফোঁটার আগেরদিন ফেরার কথা ছিল দাদার। তিন বোনের আসার কথা ছিল। ফোঁটা দেব বলেছিলাম। পরে খাওয়ার কথা বলে এসেছিলাম।’ কিন্তু সেই পরিকল্পনা অপূর্ণ থেকে গিয়েছে। দাদা যে আর বাড়ি ফেরেননি। আলোর উৎসবের দিন অন্ধকার নেমে আসে বুলবুল, তনিমাদের জীবনে। সুব্রতের প্রয়াণে ভেঙে পড়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি বলেন, ‘জীবনে অনেক দুর্যোগ দেখেছি। কিন্তু সুব্রতদার মৃত্যুটা আমার কাছে ভীষণ-ভীষণ বড় দুর্যোগ। সুব্রতদার মতো মানুষ, এত হাসিখুশি মানুষ, এত কর্মঠ মানুষ, পার্টি অন্ত প্রাণ, বিধানসভা অন্ত প্রাণ – আর হবে কিনা, সন্দেহ আছে। আমি গোয়া থেকে ফিরেই হাসপাতালে আসি। সেদিনও আমার সঙ্গে কথা হল। হাসল। বলল, আমি আবার জেলায় জেলায় যাব। আজ সন্ধ্যায় আমার বাড়ির কালীপুজোয় গিয়েছিলেন এখানকার প্রিন্সিপাল। আমি জিজ্ঞাসা করলাম। বললেন যে এখন ভালো আছেন, কাল ছেড়ে দেওয়া হবে। তারমধ্যে বিরাট হার্ট অ্যাটাক হল। চিকিৎসকরা সাধ্যমতো চেষ্টা করেছেন। কিন্তু পারেননি।’ ভাইফোঁটার ঠিক আগেই এসএসকেএম থেকে ফেরার কথা ছিল সুব্রতবাবুর। সেইমতো কথা হয়েছিল তাঁর পরিবারের সঙ্গে। কিন্তু ফেরা হয়নি ৭৫ বছরের পঞ্চায়েতমন্ত্রীর। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পরপর দুটি ‘কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’ হয়। দ্রুত তাঁকে স্থানান্তর করা হয় আইসিসিইউতে। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। রাত ৯ টা ২২ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী। সেই খবর পাওয়ার পরই চলে আসেন সুব্রতের বোনরা।