অনিসা মান্না, কলকাতা, টাইমস বাংলা ডেস্ক – নিজের বাড়ির কালীপুজো ছেড়ে ছুটে গিয়েছিলেন এসএসকেএম হাসপাতালে। সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের অধিক শরীর খারাপের কথা কানে যাওয়ার পরই ছুটে গিয়েছিলেন হাসপাতালে , তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর চোখে জল নিয়ে বেরিয়ে এসে বললেন, ‘ওঁর মরদেহ দেখতে পারব না।’ সুব্রতবাবু ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস জমানার ক্রাইসিস ম্যানেজার, বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ এবং গুরুত্বপূর্ণ দফতরের মন্ত্রী। রাত তো কেটেছে কিন্তু শোক কাটেনি মুখ্যমন্ত্রীর। কারণ সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের হাত ধরেই সত্তরের দশকে ছাত্র রাজনীতিতে হাতেখড়ি হয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাই তো তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘এমন আলোর দিনে অন্ধকার নেমে আসবে ভাবতেও পারিনি।’ শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণে শোকবার্তা জ্ঞাপন করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ এই বর্ষীয়ান মন্ত্রীর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত তাঁর নশ্বরদেহ শায়িত থাকবে রবীন্দ্র সদনে। তারপর তা যাবে গড়িয়াহাটের বাড়িতে। সেখান থেকে একডালিয়া এভারগ্রিন ক্লাবে। তারপর কেওড়াতলা মহাশ্মশানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।
শোকবার্তায় কী লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী? শোকবার্তায় তিনি লিখেছেন,
‘পশ্চিমবঙ্গ সরকার তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ নবান্ন
৩২৫, শরৎ চ্যাটার্জি রোড হাওড়া—৭১১১০২
স্মারক সংখ্যা: ১৬২/আইসিএ/এনবিতারিখ: ৪/১১/২০২১
মুখ্যমন্ত্রীর শোকবার্তা,
রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন এবং রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ ও শিল্প পুনর্গঠন মন্ত্রী সুব্রত মুখার্জীর প্রয়াণে আমি গভীর শোকপ্রকাশ করছি। তিনি আজ কলকাতায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। পাশাপাশি সুব্রতদা ক্রেতা সুরক্ষা, স্বনির্ভর গোষ্ঠী এবং স্বনিযুক্তি দফতরের মন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেছেন। হাসিমুখে তিনি জেলায় জেলায় ঘুরে আমাদের সরকারের কাজে অতুলনীয় অবদান রেখেছেন। এছাড়া কলকাতার মেয়র হিসাবে কলকাতার সামগ্রিক উন্নয়নে তাঁর বিশেষ ভূমিকা স্মরণীয়।ছাত্র আন্দোলনের সময় থেকেই আমি তাঁর সঙ্গে থেকেছি, তাঁর নেতৃত্বে বড় হয়েছি। সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের পাশাপাশি বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ড এবং শারদীয়া দুর্গাপূজার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। সুব্রতদার সঙ্গে আমার দীর্ঘদিনের সুসম্পর্ক ছিল। তিনি আমার অগ্রজ ও অভিভাবকতুল্য ছিলেন। তাঁর প্রয়াণ আমার কাছে এক বিরাট ক্ষতি শুধু নয়, রাজ্যের তথা দেশের রাজনৈতিক জগতে এক বিরাট শূন্যতার সৃষ্টি। আমি ছন্দবাণী বৌদি–সহ সুব্রত দার পরিবার–পরিজন ও অনুরাগীদের আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়’।