অনিশা মান্না, কলকাতা, টাইমস বাংলা ডেস্ক – সোমবার সৌরভ ঘোষ, তনুময় তিওয়ারি, বিকাশ মাকাল, রিচার্ড মণ্ডল, শুভায়ন দাস – এই পাঁচজনের পরিবারের সদস্যরা দমদম বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন। অপেক্ষায় ছিলেন ছেলেদের ব্যাকপ্যাক, রুকস্যাক পিঠে নিয়ে হইহই করে ফিরবে ঘরের ছেলেরা। কিন্তু তা আর হল না, বদলে ফিরেছে ছেলেদের কফিনবন্দি দেহ। একজন এখনও নিখোঁজ। তার জন্য চিন্তিত পরিবার।
সোমবার সকাল ৮টা ১৫ নাগাদ দমদম বিমানবন্দরে নামে ইন্ডিগোর 6C2346 বিমানটি। তাতে ছিল তিনজনের দেহ। এরপর ১০টায় বাকি ২ জনের দেহ নিয়ে অবতরণ করে 6E5573 বিমান। কালো কফিনবন্দি ৫ টি দেহ একসঙ্গেই বেরোয় বিমানবন্দর থেকে। সেখানেই পরিবারের সদস্যরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। পরিস্থিতি সামলাতে সেখানে ছিল বিধাননগর পুলিশ। পরিবারগুলির পাশে থাকতে হাজির হয়েছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুরের বিডিও। নিহতদের ৫ জনের মধ্যে চারজনই বিষ্ণুপুরের বাসিন্দা।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, তনুময়, সৌরভ, সুখেনদের সঙ্গে ফেসবুকে আলাপ কালীঘাটের শুভায়নের। আগামী বছর শুভায়নের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। তাই বাড়ির লোকজন এবছর দুর্গম পাহাড়ে ট্রেকিংয়ে যেতে আপত্তি তুলেছিলেন। সেই আপত্তি উড়িয়ে নতুন বন্ধুদের সঙ্গে বেরিয়ে পড়েছিলেন বছর আঠাশের শুভায়ন। কিন্তু তার আর ফেরা হল না।
এদিন তাঁর ভাই শুভেন্দু এসেছিলেন বিমানবন্দরে, তাঁর মামা তনুময় তিওয়ারির দেহ নিতে। জানালেন, দাদা-মামার সঙ্গে তাঁরও যাওয়ার কথা ছিল উত্তরাখণ্ডে। কিন্তু অফিসের কাজ পড়ে যাওয়ায় তিনি যেতে পারেননি। সেই বাধায় আশীর্বাদের সমান হয়ে দাঁড়িয়েছে তার পরিবারের কাছে। উত্তরাখণ্ড অভিযানে যাওয়া আরও কয়েকজনের খোঁজ পাওয়া যায়নি এখনও। কারণ সেই এলাকার দুর্গমতা। তবে কানাকাটা পাস লাগোয়া স্থানীয় এলাকার বাসিন্দারা নিজেরাই উদ্ধারকাজে নামে গত শনিবার। সোমবার সকালে সেখান থেকে ৩টি দেহ উদ্ধার হয়েছে। দেহগুলি নামানো হচ্ছে। ইতিমধ্যে উত্তরাখণ্ডে পৌঁছে গিয়েছেন উলুবেড়িয়ার দুই নিখোঁজ অভিযাত্রী সাগর দে ও সরিৎশেখর দাসের আত্মীয়রা। প্রিয়জনের দেহ শনাক্তকরণের পর ঘরে ফিরবেন। যাদের মৃত্যু হয়েছে তাদের পরিবারের কেউ ভাবতেই পারেনি এমনই প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রাণ চলে যাবে তাদের তরতাজা ছেলেদের।