অনিশা মান্না , কলকাতা, টাইমস বাংলা ডেস্ক – গত ১৯ শে অক্টোবর রাতে লাভলী সিং জন্ম দেয় এক কন্যাসন্তানের। ইকবালপুর থানার নেতাজি সুভাষ নার্সিং হোমে। জন্ম হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই নার্সিংহোমের কেবিনের মধ্যেই সদ্যোজাত কন্যাসন্তানটিকে মেরে ফেলে তার মা। অভিযোগ এমনটাই। নার্সিংহোমের কেবিন নং ৩০১-৩০২ নম্বরে রাখা হয়েছিল মা ও শিশুকে। বুধবার সকালে নার্স কেবিনে ঢুকতেই দেখতে পান সদ্যোজাত শিশুর নিথর দেহ পড়ে আছে। পাশে বসে আছে প্রতিক্রিয়াহীন মা । ডাক্তারকে ডেকে আনলে, ডাক্তার শিশুটিকে মৃত বলে ঘোষণা করে। বারবার জিজ্ঞাসাবাদের পর ভেঙে পরে মা এবং স্বীকার করেন তিনি শ্বাস রোধ করে একরত্তি মেয়েকে খুন করেছেন। এই ঘটনাটিতে শোরগোল পড়ে গিয়েছে নার্সিংহোম চত্বরে ।জন্ম দেওয়ার পর থেকে সুস্থ ছিল মা ও মেয়ে দুজনেই। কিন্তু লাভলী স্বীকার করেছে সে চেয়েছিল তার প্রথম সন্তান ছেলে হোক তার জেরেই সে এই ঘটনা ঘটিয়েছে । মৃত শিশুটির বাবা জানান, সকালে তিনি চা খেতে নার্সিংহোম এর বাইরে গিয়েছিলেন ফিরে এসে এই ঘটনা শুনে হতবাক্য তিনি। নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ জানায়, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়, তারা নার্সিংহোমের কেবিনে লাভলীকে পুলিশের নজরদারির মধ্যে রেখেছেন। মনোরোগ চিকিৎসকরা মনে করছেন দুটি কারণে এমন ভয়ঙ্কর ঘটনা একজন মা ঘটাতে পারে । প্রথম কন্যা সন্তান প্রসব করাটা হয়ত অপছন্দ ছিল মায়ের, শ্বশুরবাড়ির গুঞ্জনের আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছে না। দ্বিতীয়ত প্রসব-পরবর্তী বিক্ষিপ্ত পোষ্টমার্টাম সাইকোসিসের রোগী ছিলেন লাভলি। কিছু কিছু প্রসবের পর মায়েদের এমন রোগ দেখা যায় কিন্তু তার এমন চরম বহিরপ্রকাশ হতে পারে তা সত্যিই আশ্চর্যকর। বড়জোর ০.১ শতাংশ মায়ের ক্ষেত্রে এটি দেখতে পাওয়া যায়। কলকাতা মেডিকেল কলেজের মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়েছেন শিশু প্রসবের পর মায়ের তার প্রতি কোনো উষ্ণ ভালোবাসা স্নেহ মমতা না জন্মালে সেই শিশুকে মায়ের থেকে দূরে রাখাই ভালো। এবং সেই ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া জরুরী নয়তো পরবর্তীকালে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে।